Our Location

1310 Keraniganj, Dhaka.
Dhaka, Bangladesh.

অশ্বগন্ধা খেলে কি হয়? জানুন এর উপকারিতা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং ব্যবহার

অশ্বগন্ধা (Ashwagandha) একটি প্রাচীন ভারতীয় ঔষধি গাছ যা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে হাজার বছর ধরে। এটি বিশেষভাবে শক্তি, সঙ্কটের প্রতি প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, এবং মনঃসংযোগের উন্নতির জন্য পরিচিত। অশ্বগন্ধা সাধারণত অ্যাডাপ্টোজেন হিসেবে ও পরিচিত, যা মানসিক এবং শারীরিক চাপের বিরুদ্ধে শরীরকে রক্ষা করতে সহায়ক। এর ব্যবহারের প্রধান উদ্দেশ্য হল স্ট্রেস কমানো, শক্তি বৃদ্ধি, এবং শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি।এই গাছটি বিশ্বব্যাপী হেলথ সাপ্লিমেন্ট হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে, অশ্বগন্ধা খেলে কি হয়? এর উপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।

অশ্বগন্ধার উপকারিতা: আপনার শরীরের জন্য কি উপকারে আসবে?

অশ্বগন্ধা ব্যবহার করলে শরীরের অনেক দিকেই ভালো প্রভাব পড়তে পারে। এর প্রধান উপকারিতা গুলি নিম্নরূপ:

স্ট্রেস কমানো এবং মানসিক চাপের মোকাবিলা

অশ্বগন্ধা একটি আদ্রেনালাইন-সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যযুক্ত গাছ যা স্ট্রেস হরমোন (কোর্টিসল) নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গবেষণা অনুযায়ী, এটি মানসিক চাপ কমাতে কার্যকর হতে পারে। এটি শরীরকে শিথিল করতে সাহায্য করে, যা দৈনন্দিন উদ্বেগের মধ্যে আরাম দেয়।

শক্তি এবং সহনশীলতা বৃদ্ধি

অশ্বগন্ধা শক্তি এবং সহনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে, বিশেষ করে যখন আপনি শারীরিকভাবে ক্লান্তি অনুভব করেন। এটি শরীরের শক্তি স্তর উন্নত করে, যা আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার জন্য প্রস্তুত রাখে।

হৃৎস্পন্দন এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ

অশ্বগন্ধা হৃৎস্পন্দন এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক।

মনোযোগ এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি

অশ্বগন্ধা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং মনোযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি স্মৃতিশক্তি এবং শিক্ষা ক্ষমতাকে উন্নত করতে সহায়ক। এটি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ফোকাস বজায় রাখতে সাহায্য করে।


অশ্বগন্ধা খাওয়ার উপযুক্ত মাত্রা

Ashwagandha benefits

অশ্বগন্ধা সাপ্লিমেন্টের বিভিন্ন ফর্ম পাওয়া যায়—পাউডার, ক্যাপসুল, এবং তেল হিসেবে। তবে, সঠিক মাত্রা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে।

পাউডার এবং ক্যাপসুল ফর্ম

সাধারণত, 500 মিগ্রা থেকে 1 গ্রাম অশ্বগন্ধা পাউডার বা ক্যাপসুল দিনে একবার বা দুটি গ্রহণ করা সুপারিশ করা হয়। তবে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

পানি বা দুধে মিশিয়ে খাওয়া

অশ্বগন্ধা পাউডার সাধারণত গরম দুধ বা পানিতে মিশিয়ে খাওয়া যায়। এটি শরীরের শোষণ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।


অশ্বগন্ধা খেলে কি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে?

অশ্বগন্ধার অনেক উপকারিতা থাকলেও, কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। সেগুলি অন্তর্ভুক্ত:

অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা

অশ্বগন্ধা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা হয়, তবে গ্যাস্ট্রিক বা পেটের অস্বস্তি, যেমন গ্যাস এবং পেট ফাঁপা দেখা দিতে পারে। এটি খাওয়ার পর এক ঘন্টার মধ্যে এই সমস্যা হতে পারে।

এলার্জি প্রতিক্রিয়া

কিছু লোকের ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার সাথে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। যদি আপনার ত্বকে র‍্যাশ বা অন্যান্য এলার্জি লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে এটি গ্রহণ বন্ধ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

শরীরের তাপমাত্রা বাড়ানো

অশ্বগন্ধা কিছু ক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, বিশেষত যখন এটি বেশি পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। যাদের তাপমাত্রার সমস্যা আছে, তারা এটি ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।


অশ্বগন্ধা এবং হারমোনাল প্রভাব

অশ্বগন্ধা শরীরের হারমোনাল ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে পুরুষদের টেস্টোস্টেরন হরমোনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে, এটি পিরিয়ডের সমস্যা বা মাসিকের সময়ে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।

পুরুষদের জন্য উপকারিতা

অশ্বগন্ধা পুরুষদের টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি করতে সহায়ক হতে পারে। কিছু গবেষণা অনুযায়ী, এটি পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্য এবং শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।

মহিলাদের জন্য উপকারিতা

অশ্বগন্ধা মহিলাদের জন্যও উপকারী হতে পারে। এটি মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।


অশ্বগন্ধা: স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার অংশ হিসেবে এটি কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করবেন?

Ashwagandha benefits

অশ্বগন্ধা আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। আপনি এটি আপনার ডায়েটে নিয়মিতভাবে যোগ করতে পারেন এবং আপনি যে উপকারিতা পেতে চান তা দেখতে পারবেন।

সকাল বেলা নিয়মিত গ্রহণ করুন

আপনি সকালে অশ্বগন্ধা গ্রহণ করলে, এটি দিনের শুরুতে আপনার শরীর এবং মনের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

স্ট্রেস কমানোর জন্য স্নানে যোগ করুন

আপনি যদি মনঃসংযোগ এবং শিথিলতা প্রয়োজন মনে করেন, তাহলে গরম জলে অশ্বগন্ধা তেল যোগ করতে পারেন। এটি মস্তিষ্ক এবং শরীরকে শিথিল করতে সহায়ক।

অশ্বগন্ধা খেলে কি ওজন কমানো সম্ভব?

অশ্বগন্ধা ওজন কমানোর প্রক্রিয়াতে সহায়ক হতে পারে। এটি মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে এবং শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। অশ্বগন্ধার অ্যাডাপটোজেনিক গুণাবলী শরীরের স্ট্রেস হরমোন কোর্টিসল নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা ওজন বৃদ্ধির একটি প্রধান কারণ হতে পারে। এর ফলে, এটি আপনার শরীরকে চর্বি পোড়াতে সাহায্য করতে পারে এবং সুস্থ ওজন বজায় রাখতে সহায়ক।

কিভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে:

অশ্বগন্ধা শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে সহায়ক, বিশেষ করে পেটের চারপাশে। এটি বিপাককে ত্বরান্বিত করে, যা শরীরের শক্তি ব্যবহার এবং চর্বি পোড়ানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।


অশ্বগন্ধার প্রভাব: কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য

Ashwagandha benefits

অশ্বগন্ধা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে এবং রক্তচাপ কমানোর বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। এটি রক্তনালীগুলির ভিতরে উত্তেজনা কমায়, যার ফলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে যে অশ্বগন্ধা উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল কমাতে কার্যকরী।

কিভাবে সাহায্য করে:

অশ্বগন্ধা শরীরের প্রদাহ কমায় এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য সহ, এটি রক্তনালীর স্বাস্থ্য রক্ষা করে। এর ফলে, এটি উচ্চ কোলেস্টেরল এবং হাইপারটেনশন (উচ্চ রক্তচাপ) নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।


অশ্বগন্ধার সাইড ইফেক্ট: এর অতিরিক্ত ব্যবহারে কী হতে পারে?

অশ্বগন্ধা সাধারণত নিরাপদ হলেও, অতিরিক্ত ব্যবহার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। উচ্চ পরিমাণে ব্যবহারের ফলে অম্বল, মাথাব্যথা, বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি ঝুঁকি হতে পারে।

সতর্কতা:

অশ্বগন্ধা ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষ করে গর্ভবতী, স্তনপান করানো, বা নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য।


অশ্বগন্ধা খাওয়ার সঠিক সময়: কখন এবং কিভাবে খাওয়া উচিত?

অশ্বগন্ধা খাওয়ার সঠিক সময় এবং পরিমাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত এটি সকাল বা রাতে খাওয়া যেতে পারে, তবে এর প্রভাব শরীরের উপর নির্ভর করে। সকালের সময় এটি শক্তি প্রদান করতে সাহায্য করতে পারে, আর রাতে এটি ঘুমের মান উন্নত করতে সহায়ক।

সঠিক সময়:

সকালে খাওয়া হলে এটি শক্তি প্রদান করবে, এবং রাতে খাওয়া হলে এটি ঘুমের মান বাড়াতে সহায়ক। এর সাথে প্রয়োজনীয় জল বা দুধ পান করা উচিত।


অশ্বগন্ধা ব্যবহারের সঠিক মাত্রা: বেশি বা কম, কোনটি ভালো?

অশ্বগন্ধা ব্যবহারের সঠিক মাত্রা নির্ভর করে আপনার শরীরের চাহিদা এবং স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উপর। সাধারণত প্রতিদিন 300 থেকে 500 মিলিগ্রাম অশ্বগন্ধা সাপ্লিমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করা উপযুক্ত। তবে, এটি আপনার ডাক্তার বা আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শে নেওয়া উচিত।

সঠিক পরিমাণ:

যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু পরিমাণ গ্রহণ করা উচিত। অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহারের ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, তাই পরিমাণের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।

অশ্বগন্ধা: গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় নিরাপদ?

Ashwagandha benefits

অশ্বগন্ধা গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় নিরাপদ নাও হতে পারে। এর প্রভাব গর্ভাবস্থায় থাকা বা নবজাতকের জন্য অনিশ্চিত হতে পারে। কিছু গবেষণায় জানা গেছে যে অশ্বগন্ধা গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা হলে জরায়ুর সংকোচন হতে পারে, যা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।

গর্ভাবস্থায় সতর্কতা:

গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অশ্বগন্ধা ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়ও এটি নিরাপদ নাও হতে পারে, কারণ এটি দুধের মাধ্যমে শিশুর শরীরে প্রবাহিত হতে পারে।


অশ্বগন্ধা খেলে কি কিডনি বা লিভারের ওপর কোনো প্রভাব পড়ে?

অশ্বগন্ধার নিয়মিত ব্যবহার কিডনি বা লিভারের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে যদি অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে অত্যধিক পরিমাণে অশ্বগন্ধা ব্যবহারের ফলে কিডনি এবং লিভারের ফাংশন প্রভাবিত হতে পারে।

সতর্কতা:

অশ্বগন্ধা ব্যবহার করার আগে কিডনি বা লিভারের সমস্যা থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। উপযুক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে এটি শরীরের জন্য সাধারণত নিরাপদ।


অশ্বগন্ধা খাওয়ার সাথে অন্যান্য ঔষধের পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া

অশ্বগন্ধার সাথে কিছু ঔষধের পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। বিশেষ করে, অশ্বগন্ধা যদি স্ট্রেস রিলিফ, উদ্বেগ বা ঘুমের জন্য ব্যবহৃত হয়, তবে তা কিছু ড্রাগের প্রভাব পরিবর্তন করতে পারে, যেমন উদ্বেগের ঔষধ বা সেডেটিভস।

সতর্কতা:

যদি আপনি অন্য কোনো ঔষধ গ্রহণ করছেন, তাহলে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এটি ঔষধের কার্যকারিতা প্রভাবিত করতে পারে।


অশ্বগন্ধা: প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে এটি কিভাবে শরীরের জন্য উপকারী?

Ashwagandha benefits

অশ্বগন্ধা একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা অনেক ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করতে সক্ষম। এর অ্যাডাপ্টোজনিক গুণাবলী শরীরকে স্ট্রেস থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

শরীরের জন্য উপকারিতা:

অশ্বগন্ধা শরীরের শক্তি বাড়ায়, ক্লান্তি কমায়, এবং মানসিক চাপের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এটি প্রদাহ কমাতে সহায়ক, এবং হার্ট এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।


অশ্বগন্ধা: বিজ্ঞানীরা কি বলেন? একাধিক গবেষণার ফলাফল

বিজ্ঞানীরা অশ্বগন্ধার উপকারিতা নিয়ে বেশ কয়েকটি গবেষণা করেছেন। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে এটি স্ট্রেস কমাতে, ঘুমের মান উন্নত করতে, এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়ক।

গবেষণার ফলাফল:

গবেষণায় জানা গেছে যে অশ্বগন্ধা দৈনিক ব্যবহারে শরীরের কোর্টিসল স্তর কমাতে পারে এবং উদ্বেগের অনুভূতি হ্রাস করতে সাহায্য করে। এটি আরো শক্তি বৃদ্ধি এবং শারীরিক কর্মক্ষমতা উন্নত করতে সক্ষম।


অশ্বগন্ধার ব্যবহার: প্রতিদিনের ডায়েটে কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়?

অশ্বগন্ধা ব্যবহারের জন্য আপনি এটি সাপ্লিমেন্ট হিসেবে নিতে পারেন অথবা মসলা হিসেবে রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন। ডায়েটে অশ্বগন্ধা অন্তর্ভুক্ত করলে এটি শরীরের বিভিন্ন উপকারিতা দিতে পারে।

কিভাবে অন্তর্ভুক্ত করবেন:

অশ্বগন্ধা পাউডার দুধ বা জল মিশিয়ে প্রতিদিন খেতে পারেন। এছাড়াও, এটি বিভিন্ন সুপ, স্মুদি, বা চা তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।


অশ্বগন্ধার ব্যবহারকারী অভিজ্ঞতা: বাস্তব জীবনের উদাহরণ

অনেক ব্যবহারকারী অশ্বগন্ধা খেয়ে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের মতে, এটি তাদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। বিশেষত যারা অফিসে দীর্ঘ সময় কাজ করেন এবং মনোযোগের অভাব অনুভব করেন, তারা অশ্বগন্ধার প্রতি ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

Frequently Asked Questions(FAQs)

অশ্বগন্ধা কি?

অশ্বগন্ধা একটি প্রাকৃতিক ভেষজ যা আদৌ অত্যন্ত জনপ্রিয়। এটি “আশ্বগন্ধা” বা “উশির” নামে পরিচিত এবং এটি প্রাচীন আয়ুর্বেদিক ওষুধে ব্যবহৃত হয়। অশ্বগন্ধা স্ট্রেস, উদ্বেগ, এবং শারীরিক ক্লান্তি কমাতে সহায়ক।


অশ্বগন্ধা খেলে কি উপকার হয়?

অশ্বগন্ধা খেলে শরীরের স্ট্রেস হরমোন কোর্টিসল নিয়ন্ত্রণে থাকে, উদ্বেগ কমে, এবং ঘুমের মান উন্নত হয়। এটি শক্তি বৃদ্ধি, মানসিক ফোকাস উন্নতি, এবং ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।


অশ্বগন্ধা কি গর্ভাবস্থায় নিরাপদ?

গর্ভাবস্থায় অশ্বগন্ধা ব্যবহারে কিছু ঝুঁকি থাকতে পারে। এটি জরায়ুর সংকোচন সৃষ্টি করতে পারে, তাই গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।


অশ্বগন্ধা খাওয়ার সঠিক সময় কখন?

অশ্বগন্ধা সাধারণত রাতে খাওয়া ভালো, কারণ এটি ঘুমের মান বাড়াতে সাহায্য করে। তবে, সকালের সময়ও এটি শক্তি প্রদান করতে সহায়ক হতে পারে। আপনার শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী সময় ঠিক করতে হবে।


অশ্বগন্ধা খাওয়ার পর কি সাইড ইফেক্ট হতে পারে?

অশ্বগন্ধা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে যেমন মাথাব্যথা, অম্বল বা শ্বাসকষ্ট। অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত এবং সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত।


অশ্বগন্ধা কি কিডনি বা লিভারের জন্য ক্ষতিকর?

অশ্বগন্ধা সাধারণত নিরাপদ, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারে কিডনি বা লিভারের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। কিডনি বা লিভারের সমস্যা থাকলে, অশ্বগন্ধা ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।


অশ্বগন্ধা কীভাবে ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করবেন?

অশ্বগন্ধা পাউডার বা সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ডায়েটে যোগ করা যেতে পারে। এটি দুধ, জল, স্মুদি বা চা মিশিয়ে খেতে পারেন। রান্নায়ও কিছু মসলা হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।


অশ্বগন্ধা কি ওজন কমাতে সাহায্য করে?

অশ্বগন্ধা মেটাবলিজম বাড়িয়ে শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে সহায়ক হতে পারে। এটি কোর্টিসল নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা ওজন বৃদ্ধির প্রধান কারণ। সঠিক ডায়েট ও ব্যায়ামের সাথে এটি কার্যকর হতে পারে।


উপসংহার

অশ্বগন্ধা একটি শক্তিশালী ঔষধি গাছ যা শরীরের বিভিন্ন দিকের জন্য উপকারী। তবে, এটি খাওয়ার সময় পরিমাণ এবং ব্যবহার সতর্কভাবে নির্ধারণ করা উচিত। যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়, তবে অশ্বগন্ধা আপনার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

অশ্বগন্ধা ডায়েটের অংশ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং এটি একটি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রতিদিনের জীবনে অশ্বগন্ধাকে অন্তর্ভুক্ত করা হলে, এটি আপনাকে শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা অর্জনে সাহায্য করতে পারে। তবে, এর ব্যবহারের আগে সর্বদা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষ করে যদি আপনি অন্য কোনো ঔষধ গ্রহণ করেন বা বিশেষ স্বাস্থ্য পরিস্থিতিতে থাকেন।

DR. SOHEL RANA
DR. SOHEL RANA

হার্বাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ সোহেল রানা B.A.M.S (DU) সরকারী ইউনানী এবং আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মিরপুর-১৩ ঢাকা।

ডিএমইউ (আলট্রাসনোগ্রাফি) ঢাকা রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট আয়ুর্বেদিক ফিজিসিয়ান।

উৎপাদন এবং গভেষনা কর্মকর্তা (এলিয়েন ফার্মা লিমিটেড)

চর্ম ও যৌন, রুপ ও ত্বক, বাত ব্যাথা, গ্যাস্ট্রিক লাইফ স্টাইল আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ও হারবাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।

Articles: 75

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *