পিত্তথলির পাথর এর লক্ষণ | প্রাথমিক সংকেত ও প্রতিকার

সবার সাথে শেয়ার করুন

পিত্তথলির পাথর আমাদের শরীরে একটি সাধারণ সমস্যা। এটি অনেকের জন্য ব্যথা এবং অস্বস্তি সৃষ্টি করে। পিত্তথলির পাথর সাধারণত পিত্তথলিতে জমে থাকা কঠিন কণার ফলে গঠিত হয়। এই পাথরগুলি বিভিন্ন আকার ও আকৃতির হতে পারে। পিত্তথলির পাথরের লক্ষণগুলি প্রাথমিক পর্যায়ে খুব সাধারণ হতে পারে, যা অনেকেই অবহেলা করেন। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে, এই লক্ষণগুলি গুরুতর আকার নিতে পারে। পিত্তথলির পাথর সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং লক্ষণগুলি দ্রুত চিহ্নিত করা খুবই জরুরি। এই ব্লগে আমরা পিত্তথলির পাথরের বিভিন্ন লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি এটি আপনার জন্য সহায়ক হবে।

Table of Contents

পিত্তথলির পাথর কী

পিত্তথলির পাথর কী:

পিত্তথলির পাথর হল কঠিন কণা যা আপনার পিত্তথলির মধ্যে গঠিত হয়। এটি সাধারণত কোলেস্টেরল এবং বিলিরুবিনের অতিরিক্ত থেকে তৈরি হয়। পিত্তথলির পাথর বেশিরভাগ সময়ে লক্ষণহীন থাকে, কিন্তু কখনও কখনও এটি তীব্র ব্যথা এবং অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

পিত্তথলির কাজ

পিত্তথলি আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এটি লিভার থেকে পিত্ত সংগ্রহ করে এবং তা হজমের জন্য দায়ী। পিত্ত আমাদের খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে, বিশেষ করে চর্বিজাতীয় খাবার।

পাথরের গঠন

পিত্তথলির পাথর প্রধানত দুই ধরনের হয়: কোলেস্টেরল পাথর এবং পিগমেন্ট পাথর। কোলেস্টেরল পাথর হলুদ বা সবুজ রঙের হতে পারে এবং এটি প্রধানত অতিরিক্ত কোলেস্টেরল থেকে তৈরি হয়। পিগমেন্ট পাথর গাঢ় বাদামী বা কালো রঙের হয় এবং এটি বিলিরুবিনের অতিরিক্ত থেকে তৈরি হয়।

আপনার কি কখনও পিত্তথলির পাথর হয়েছে? এটি কীভাবে আপনার জীবনে প্রভাব ফেলেছে? আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করুন।

প্রাথমিক লক্ষণ

পিত্তথলির পাথর একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এর প্রাথমিক লক্ষণগুলি দ্রুত শনাক্ত করা জরুরি। প্রাথমিক লক্ষণগুলি সাধারণত মৃদু হলেও, পরবর্তীতে তা তীব্র হতে পারে। এ কারণে প্রাথমিক লক্ষণগুলি জানা এবং সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

অ্যাবডোমিনাল ব্যথা

অ্যাবডোমিনাল ব্যথা পিত্তথলির পাথরের একটি প্রধান লক্ষণ। পেটের ডান দিকে বা মধ্যভাগে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। ব্যথা সাধারণত খাওয়ার পর বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পর। ব্যথা কিছু সময় স্থায়ী হয়। আবার কখনও কখনও তা কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

বমি ও বমির ভাব

বমি ও বমির ভাবও পিত্তথলির পাথরের লক্ষণ হতে পারে। খাওয়ার পর বমি হতে পারে। এর সাথে মৃদু থেকে তীব্র বমির ভাবও থাকতে পারে। অনেক সময় বমির সাথে পেটে ব্যথা ও অস্বস্তি যুক্ত হয়।

সাধারণ লক্ষণ

পিত্তথলির পাথর হলে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। কিছু লক্ষণ সাধারণ এবং সহজেই চেনা যায়। এই লক্ষণগুলি সম্পর্কে জানলে আপনি প্রাথমিকভাবে পিত্তথলির পাথর শনাক্ত করতে পারবেন।

বদহজম ও পেট ফাঁপা

পিত্তথলির পাথর থাকলে বদহজম হতে পারে। খাবার খাওয়ার পর পেট ভারী লাগতে পারে।

পেট ফাঁপার সমস্যা হলে আপনি অস্বস্তি অনুভব করবেন। বিশেষ করে চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পর এই সমস্যাটি বেশি দেখা যায়।

জন্ডিস

পিত্তথলির পাথর পিত্তনালী বন্ধ করে দিতে পারে। ফলে পিত্তরস ঠিকমতো নিঃসরণ হয় না।

এর ফলে জন্ডিস হতে পারে। আপনার ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যেতে পারে।

আপনার প্রস্রাবও গাঢ় রঙের হতে পারে। এটি একটি গুরুতর লক্ষণ, যা দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।

আপনি যদি এই লক্ষণগুলি অনুভব করেন, তবে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আপনার স্বাস্থ্য আপনার হাতে, তাই সচেতন থাকুন।

পিত্তথলিতে-পাথর-কেন-হয়
পিত্তথলিতে-পাথর-কেন-হয়

প্রতিকারের প্রাথমিক ধাপ

পিত্তথলির পাথর একটি প্রচলিত স্বাস্থ্য সমস্যা যা অনেকের জীবনে যন্ত্রণা ও অসুবিধার সৃষ্টি করে। প্রতিকারের প্রাথমিক ধাপগুলি অনুসরণ করে আপনি এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন। এই ধাপগুলি সহজেই আপনার দৈনন্দিন জীবনে যুক্ত করা যেতে পারে।

ডায়েট পরিবর্তন

ডায়েট পরিবর্তন করা পিত্তথলির পাথর প্রতিকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করুন যা উচ্চ ফাইবার এবং কম ফ্যাটযুক্ত।

আপনার পিত্তথলি স্বাস্থ্যকর রাখতে আপনি বেশি পরিমাণে ফল ও শাকসবজি খেতে পারেন। প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং দ্রুত খাবার এড়িয়ে চলুন।

আপনার জল গ্রহণের পরিমাণ বাড়ান। পর্যাপ্ত জল পান করলে পিত্তথলির পাথর গঠনের ঝুঁকি কমে যায়।

ব্যায়াম

ব্যায়াম আপনার পিত্তথলির স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম আপনার শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে, যা পিত্তথলির পাথর গঠনে বাধা দেয়।

আপনি দৈনিক হাঁটা, যোগব্যায়াম বা জিমে যাওয়ার মাধ্যমে ব্যায়াম করতে পারেন। এটি আপনার পিত্তথলির কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করবে।

ব্যায়াম আপনার শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায়, যা পিত্তথলির পাথর গঠনের সম্ভাবনা কমায়।

আপনার জীবনে এই পরিবর্তনগুলি যুক্ত করে আপনি পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধ করতে পারেন। আপনি কি এই ধাপগুলি আপনার দৈনন্দিন জীবনে যুক্ত করতে প্রস্তুত?

চিকিৎসা পদ্ধতি

পিত্তথলির পাথর একটি সাধারণ সমস্যা। সঠিক চিকিৎসা না করলে এটি বিপদজনক হতে পারে। চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা প্রয়োজন। নিচে পিত্তথলির পাথর নিরাময়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতির আলোচনা করা হলো।

প্রাকৃতিক চিকিৎসা

প্রাকৃতিক উপায়ে পিত্তথলির পাথর কমানোর কিছু উপায় রয়েছে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে উপকার পাওয়া যায়। বেশি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। যেমন- শাকসবজি, ফলমূল।

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। জল শরীরকে ডিটক্স করতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরি। এটি শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায়।

ঔষধ

পিত্তথলির পাথর দূর করতে কিছু ঔষধ ব্যবহার করা হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ খাওয়া উচিত নয়। Ursodeoxycholic acid এবং Chenodeoxycholic acid প্রভৃতি ঔষধ ব্যবহার করা হয়।

এই ঔষধগুলো পিত্তথলির পাথরকে ধীরে ধীরে গলিয়ে দেয়। কিন্তু, এটি দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি। সব রোগীর জন্য উপযুক্ত নয়।

পিত্তথলির পাথর এর লক্ষণ: প্রাথমিক সংকেত ও প্রতিকার

Credit: www.dr.delowar.com

সার্জিকাল পদ্ধতি

পিত্তথলির পাথর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সার্জিকাল পদ্ধতি একটি কার্যকর উপায়। যদি আপনার পিত্তথলির পাথর নিয়ে প্রচন্ড ব্যথা হয় বা অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি কাজ না করে, সার্জারি হতে পারে আপনার জন্য সঠিক সমাধান। সার্জারি করার দুটি প্রধান পদ্ধতি রয়েছে: ল্যাপারোস্কোপিক চোলেসিস্টেকটমি এবং খোলা সার্জারি।

ল্যাপারোস্কোপিক চোলেসিস্টেকটমি

ল্যাপারোস্কোপিক চোলেসিস্টেকটমি হল একটি কম ইনভেসিভ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে পিত্তথলি অপসারণ করা হয়।

এটি কম ব্যথা এবং দ্রুত পুনরুদ্ধারের জন্য পরিচিত। আপনি মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে আপনার স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে যেতে পারেন।

আমার এক বন্ধু এই পদ্ধতিতে সার্জারি করেছিল এবং তিনি বলেছিলেন যে তার ব্যথা কম ছিল এবং দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন।

খোলা সার্জারি

খোলা সার্জারি হল একটি বেশি ইনভেসিভ পদ্ধতি যেখানে বড় কাটের মাধ্যমে পিত্তথলি অপসারণ করা হয়।

এটি সাধারণত তখন করা হয় যখন ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতি কার্যকর হয় না।

খোলা সার্জারির পর পুনরুদ্ধার সময় বেশি লাগে এবং ব্যথা বেশি হতে পারে।

তাহলে, কোন পদ্ধতি আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হতে পারে? আপনি কি দ্রুত পুনরুদ্ধার চান বা আপনার পাথরটি বেশি জটিল? আপনার ডাক্তার আপনার সাথে আলোচনা করে সঠিক পদ্ধতি নির্ধারণ করতে পারেন।

পোস্ট-অপারেটিভ যত্ন

পোস্ট-অপারেটিভ যত্ন পিত্তথলির পাথর অপারেশন সম্পন্ন হওয়ার পরে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অপারেশনের পরে দ্রুত সুস্থ হতে হলে কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সঠিক যত্ন না নিলে অসুবিধা হতে পারে।

খাদ্য নিয়ন্ত্রণ

অপারেশনের পরে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অপরিহার্য। প্রথমে হালকা এবং সহজপাচ্য খাদ্য গ্রহণ করুন। তেল ও মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। বেশি পানি পান করুন। চর্বিযুক্ত খাবার কম খান। সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম

অপারেশনের পরে পর্যাপ্ত বিশ্রাম প্রয়োজন। শরীরকে আরাম দিন। তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করবেন না। পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। বিশ্রাম আপনার শরীরকে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করবে।

পিত্তথলির পাথর এর লক্ষণ: প্রাথমিক সংকেত ও প্রতিকার

Credit: www.jagonews24.com

জীবনধারার পরিবর্তন

পিত্তথলির পাথর থেকে মুক্তি পেতে জীবনধারার পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক জীবনধারার মাধ্যমে পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিচে জীবনধারার পরিবর্তনের দুটি প্রধান দিক নিয়ে আলোচনা করা হল।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অপরিহার্য। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি এবং ফলমূল খাওয়া উচিত। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, যেমন গোটা শস্য, খুবই উপকারী। অতিরিক্ত চর্বি ও তেলযুক্ত খাবার পরিহার করুন। নিয়মিত পানি পান করুন।

নিয়মিত ব্যায়াম

নিয়মিত ব্যায়াম পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধে সহায়ক। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। হাঁটা, জগিং, সাইক্লিং অথবা যোগব্যায়াম করতে পারেন। ব্যায়াম শরীরের মেটাবলিজম ঠিক রাখে। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক।

ঝুঁকি ও জটিলতা

পিত্তথলির পাথর একটি সাধারণ সমস্যা যা অনেক ঝুঁকি এবং জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এটি পিত্তথলিতে পাথর জমার ফলে ঘটে। লক্ষণগুলি প্রাথমিকভাবে তীব্র ব্যথা, বমি, এবং হজমের সমস্যার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। তবে, সময়মতো চিকিৎসা না করলে এটি আরও গুরুতর ঝুঁকি এবং জটিলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

ইনফেকশন

পিত্তথলির পাথর ইনফেকশন সৃষ্টি করতে পারে। পাথর পিত্তথলির মধ্যে আটকে গেলে, এটি ইনফেকশনের কারণ হতে পারে। ইনফেকশন হলে তীব্র ব্যথা, জ্বর এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অস্বস্তি দেখা দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না করলে ইনফেকশন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং আরো জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

প্যানক্রিয়াটাইটিস

পিত্তথলির পাথর প্যানক্রিয়াটাইটিসের কারণ হতে পারে। পাথর পিত্তনালী বন্ধ করে দিলে প্যানক্রিয়াটাইটিস হতে পারে। এটি প্যানক্রিয়াসের প্রদাহ সৃষ্টি করে। প্যানক্রিয়াটাইটিস খুব ব্যথাযুক্ত এবং গুরুতর হতে পারে। এটি হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করে। চিকিৎসা না করলে এটি জীবনহানির কারণ হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় প্রভাব

গর্ভাবস্থায় প্রভাব:

গর্ভাবস্থায় পিত্তথলির পাথর তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আপনি যখন গর্ভবতী হন, তখন শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনগুলি পিত্তথলিতে প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রতিটি গর্ভবতী নারীর জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ যে, তারা তাদের লক্ষণগুলি সম্পর্কে সচেতন থাকে।

গর্ভবতী নারীদের লক্ষণ

গর্ভাবস্থায় পিত্তথলির পাথরের লক্ষণগুলি সাধারণত তীব্র পেট ব্যথা দিয়ে শুরু হয়।

এই ব্যথা প্রায়শই ডান দিকের পাঁজরের নিচে অনুভূত হয়।

এছাড়াও, বমি বমি ভাব, বমি এবং হজমের সমস্যা হতে পারে।

আপনি যদি এই ধরনের লক্ষণগুলি অনুভব করেন, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

নিরাপদ চিকিৎসা

আপনার ডাক্তার আপনাকে নিরাপদ ওষুধ এবং চিকিৎসা পদ্ধতির পরামর্শ দেবেন।

সাধারণত, ওষুধ এবং বিশেষ খাদ্যতালিকা আপনাকে আরাম দেবে।

তবে, জটিল পরিস্থিতিতে ডাক্তার সার্জারির পরামর্শ দিতে পারেন।

আপনার এবং আপনার শিশুর নিরাপত্তা সর্বদা প্রাধান্য দেওয়া হয়।

আপনি কি কখনও গর্ভাবস্থায় পিত্তথলির পাথরের সমস্যা অনুভব করেছেন? আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন এবং অন্যান্য গর্ভবতী নারীদের সাহায্য করুন।

পিত্তথলিতে-পাথর-কেন-হয়
পিত্তথলিতে-পাথর-কেন-হয়

শিশুদের পিত্তথলির পাথর

পিত্তথলির পাথর শিশুদের মধ্যে বিরল হলেও এর উপস্থিতি হতে পারে। শিশুদের পিত্তথলির পাথর হলে তাঁদের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে এবং পিতামাতাদের উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে। লক্ষণগুলি বুঝতে পারলে চিকিৎসা সহজ হবে।

লক্ষণ

শিশুদের পিত্তথলির পাথরের কিছু সাধারণ লক্ষণ আছে। আপনি যদি আপনার শিশুকে পেটের উপরের অংশে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করতে দেখেন, তা হতে পারে একটি প্রাথমিক লক্ষণ।

অনেক সময়, আপনার শিশু খাবার খাওয়ার পর অস্বস্তি বা বমি করতে পারে।

আরেকটি লক্ষণ হলো, আপনার শিশুর ত্বক বা চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়া, যা জন্ডিসের লক্ষণ হতে পারে।

চিকিৎসা

শিশুদের পিত্তথলির পাথরের চিকিৎসা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করা উচিত।

আপনি যদি লক্ষণগুলি দেখে সন্দেহ করেন, দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।

কিছু ক্ষেত্রে, অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে, তবে অনেক সময় ওষুধ এবং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে চিকিৎসা সম্ভব।

আপনার শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

পিত্তথলির পাথর একটি সাধারণ সমস্যা, যা প্রায়শই অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস থেকে উদ্ভূত হয়। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। এই ব্যবস্থাগুলো সহজে অনুসরণযোগ্য এবং দৈনন্দিন জীবনে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

প্রচুর জল পান

প্রতিদিন প্রচুর জল পান করুন। জল শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। এটি পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধে সহায়ক। প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস জল পান করুন। এটি শরীরের ফ্লুইড ব্যালান্স রক্ষা করে।

ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য

ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য যেমন শাকসবজি, ফলমূল এবং পুরো শস্য গ্রহণ করুন। এগুলো পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধে সহায়ক।

মিথ ও বাস্তবতা

পিত্তথলির পাথর সম্পর্কে অনেক মিথ প্রচলিত আছে। এই মিথগুলো আমাদের বিশ্বাসকে প্রভাবিত করে এবং বাস্তবতাকে আড়াল করে। চলুন, এই মিথ এবং বাস্তবতাকে আরও পরিষ্কারভাবে বুঝি।

ভুল ধারণা

অনেকেই মনে করেন পিত্তথলির পাথর হলে সবসময় প্রচন্ড ব্যথা হয়। বাস্তবে, অনেক সময় পাথর থাকা সত্ত্বেও কোনো লক্ষণ দেখা যায় না।

আরেকটি ভুল ধারণা হলো, পিত্তথলির পাথর হলে অপারেশনই একমাত্র সমাধান। বাস্তবে, ছোট পাথর এবং হালকা লক্ষণগুলি প্রায়শই ঔষধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

সঠিক তথ্য

যারা পিত্তথলির পাথরের সমস্যায় ভোগেন তাদের প্রায় ৮০% ক্ষেত্রে কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। আপনি যদি পিত্তথলির পাথর নিয়ে চিন্তিত হন, লক্ষণগুলি ভালোভাবে লক্ষ্য করুন।

পিত্তথলির পাথরের চিকিৎসায় অপারেশন সবচেয়ে সাধারণ কিন্তু একমাত্র সমাধান নয়। আপনি যদি অপারেশন নিয়ে চিন্তিত হন, আপনার ডাক্তারের সাথে অন্য বিকল্পগুলি আলোচনা করুন।

আপনার এই অভিজ্ঞতা হয়েছিল কি? আপনি কি কখনো পিত্তথলির পাথরের লক্ষণ অনুভব করেছেন? আপনার মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করুন।

পিত্তথলির পাথর এর লক্ষণ: প্রাথমিক সংকেত ও প্রতিকার

Credit: seradoctor.com

Frequently Asked Questions

পিত্তথলিতে পাথর হলে কী কী লক্ষণ দেখা যায়?

পিত্তথলিতে পাথর হলে তীব্র পেটব্যথা, বমি, জ্বর, বমির ভাব, পেটফাঁপা, হজমের সমস্যা এবং ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যেতে পারে।

অপারেশন ছাড়া কি পিত্তথলির পাথর অপসারণ করা যায়?

না, অপারেশন ছাড়া পিত্তথলির পাথর সম্পূর্ণ অপসারণ সম্ভব নয়। কিছু ক্ষেত্রে ওষুধ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তা সবসময় কার্যকর নয়।

পিত্তথলির ব্যথা কোথায় হয়?

পিত্তথলির ব্যথা সাধারণত ডান দিকে পাঁজরের নিচে অনুভূত হয়। ব্যথা পিঠ বা ডান কাঁধেও ছড়াতে পারে।

গলব্লাডারে পাথর হলে কী কী লক্ষণ দেখা যায়?

গলব্লাডারে পাথর হলে তীব্র পেট ব্যথা, বমি, জ্বর, ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া, হজমে সমস্যা দেখা যায়।

Conclusion

পিত্তথলির পাথরের লক্ষণগুলি জানা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। যেকোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রাথমিকভাবে লক্ষণগুলি চিনে নিলে, বড় সমস্যার সম্ভাবনা কমে। সুস্থ জীবনযাপন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন। শরীরের প্রতি যত্নশীল থাকুন। নিয়মিত চিকিৎসা পরামর্শ নিন। সচেতন থাকলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব। আপনার সুস্থতা আমাদের কাম্য।

সবার সাথে শেয়ার করুন

DR. SOHEL RANA
DR. SOHEL RANA

হার্বাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ সোহেল রানা B.A.M.S (DU) সরকারী ইউনানী এবং আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মিরপুর-১৩ ঢাকা।

ডিএমইউ (আলট্রাসনোগ্রাফি) ঢাকা রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট আয়ুর্বেদিক ফিজিসিয়ান।

উৎপাদন এবং গভেষনা কর্মকর্তা (এলিয়েন ফার্মা লিমিটেড)

চর্ম ও যৌন, রুপ ও ত্বক, বাত ব্যাথা, গ্যাস্ট্রিক লাইফ স্টাইল আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ও হারবাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।

Articles: 237

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *