রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর সতর্কতা | সুস্থ থাকার ১০টি টিপস

সবার সাথে শেয়ার করুন

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। রোজা রাখার সময় রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হতে পারে। রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া এবং নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পরিমিত খাবার গ্রহণ এবং শারীরিক ক্রিয়াকলাপ পরিচালনা করা উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। এভাবে ডায়াবেটিস রোগীরা রমজান মাসে সুস্থ থেকে রোজা পালন করতে পারবেন।

ইফতারে ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন: মিষ্টি ও তেলেভাজা খাবারের পরিবর্তে পুষ্টিকর ও হালকা খাবার বেছে নিন।

Table of Contents

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রস্তুতি

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। রোজা রাখার সময় খাদ্যাভ্যাস ও ওষুধের সময়সূচী পরিবর্তন হয়। তাই আগে থেকেই সঠিক প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন।

ডাক্তারের পরামর্শ

রমজান শুরু হওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় কোনো পরিবর্তন প্রয়োজন কিনা তা জানতে পারেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোজা রাখার প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

ওষুধের সময়সূচী

রমজানে ওষুধের সময়সূচী পরিবর্তন করতে হয়। সেহরির সময় এবং ইফতারের পর ওষুধ গ্রহণ করতে হতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের সময়সূচী নির্ধারণ করুন।

খাবার পরিকল্পনা

fat-free-foods
fat-free-foods

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাবার পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাবার পরিকল্পনা সুস্থ থাকার পাশাপাশি রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সেহরি ও ইফতারের সময় সঠিক খাদ্য নির্বাচন করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।

সেহরি ও ইফতারের খাদ্য তালিকা

সেহরিতে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI)যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। এগুলো ধীরে ধীরে গ্লুকোজ সরবরাহ করে। উদাহরণস্বরূপ, ছোলা, সবজি, বাদামি চাল, ওটস, এবং দুধ। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। যেমন, ডিম, দুধ, এবং বাদাম।

ইফতারে অনেকেই মিষ্টি ও তৈলাক্ত খাবার খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এগুলো পরিহার করা উচিত। ইফতারে খেজুর, ফলমূল, সবজি, এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। যেমন, মুরগির মাংস, মাছ, ডাল।

প্রচুর পানি পান করা

রমজানে প্রচুর পানি পান করা খুবই জরুরি। পানি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। সেহরি ও ইফতার উভয় সময়েই পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

পানি ছাড়াও লেবুর শরবত, ডাবের পানি, এবং ঘোল পান করতে পারেন। এগুলো শরীরকে হাইড্রেটেড রাখবে। শর্করা যুক্ত পানীয় পরিহার করুন।

রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোজা রাখার সময় খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তনের কারণে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তবে কিছু সতর্কতা ও সঠিক নিয়ম মেনে চললে রমজান মাসেও সুস্থ ও নিরাপদ থাকা সম্ভব।

নিয়মিত মনিটরিং

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিয়মিত মনিটরিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের রোজা রাখার ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অনেকটা ওঠানামা করতে পারে। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে গ্লুকোজ পরীক্ষা করা উচিত।

যে সময়গুলোতে গ্লুকোজ পরীক্ষা করা উচিত:

  • সেহরি খাওয়ার আগে এবং পরে
  • ইফতারির আগে এবং পরে
  • রাতের খাবারের আগে এবং পরে

এই নিয়মিত মনিটরিং আপনাকে রক্তের গ্লুকোজের পরিবর্তন সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়তা করবে।

রক্তের গ্লুকোজের লক্ষ্যমাত্রা

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রক্তের গ্লুকোজের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোজার সময় এই লক্ষ্যমাত্রা মেনে চলা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সাধারণত রক্তের গ্লুকোজের লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে:

পরীক্ষার সময় লক্ষ্যমাত্রা (mg/dL)
খালি পেটে ৭০-১৩০
খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে ১৮০-এর নিচে

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং তা মেনে চলা উচিত। রোজার সময় গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে খাবারের পরিমাণ ও সময়ের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে।

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীরা সতর্কতা অবলম্বন করে, সঠিক নিয়ম মেনে চললে এবং নিয়মিত মনিটরিং করলে সুস্থ ও নিরাপদ থাকতে পারবেন।

শারীরিক কার্যকলাপ

diabetic-patients
diabetic-patients

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শারীরিক কার্যকলাপ বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। দীর্ঘ সময় ধরে উপবাস থাকার কারণে শরীরের শক্তি হ্রাস পায়, তাই সঠিক শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। তবে, শারীরিক কার্যকলাপের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে, যাতে ডায়াবেটিস রোগীরা সুস্থ ও সক্রিয় থাকতে পারেন।

ব্যায়ামের সময়

রমজানে ব্যায়াম করার সময় নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইফতারের আগে বা পরে ব্যায়াম করা সবচেয়ে ভালো। কারণ ইফতারির আগে শরীর আরও বেশি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। ইফতারির পর, শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি থাকে এবং এ সময়ে ব্যায়াম করলে দেহে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না।

হালকা ব্যায়াম

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রমজানে হালকা ব্যায়াম করা উত্তম। নিচে কিছু হালকা ব্যায়ামের উদাহরণ দেওয়া হলো:

  • হালকা হাঁটা
  • ইয়োগা
  • স্ট্রেচিং
  • ব্রিদিং এক্সারসাইজ

এই ধরনের ব্যায়ামগুলি রক্তে শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরকে সজীব রাখে।

এই তথ্যগুলো মনে রেখে, ডায়াবেটিস রোগীরা রমজানে শারীরিক কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজের শরীরকে সুস্থ ও সক্রিয় রাখতে পারেন। সতর্কতা মেনে চললে, রমজান মাসটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও হতে পারে সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ।

ইফতারের সময় সতর্কতা

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ইফতারের সময় বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। ইফতার হলো দীর্ঘ রোজার পর প্রথমবার খাওয়া। তাই এটি শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার বাছাইয়ে সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।

কোন খাবার এড়িয়ে চলা

ইফতারের সময় উচ্চ চিনি ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। যেমন, মিষ্টি পানীয়, কেক, পেস্ট্রি এবং অধিক তেলে ভাজা খাবার। এসব খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি বিপজ্জনক।

মিষ্টি এবং চর্বি কমানো

ইফতারে মিষ্টি এবং চর্বিযুক্ত খাবারের পরিমাণ কমানো উচিত। মিষ্টি খাবার যেমন জিলাপি, মিষ্টি দই, এবং চর্বিযুক্ত খাবার যেমন পরোটা, পকোড়া এড়িয়ে চলা উচিত। এর পরিবর্তে ফলমূল, শাকসবজি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ভালো।

অতিরিক্ত খাওয়া এড়ানো

Fasting-food-list
Fasting-food-list

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অতিরিক্ত খাওয়া এড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে খাবারের পরিমাণ ও ধরণের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত, কারণ এটি রক্তে শর্করার মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা এবং অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলা ডায়াবেটিস রোগীদের সুস্থ থাকার জন্য অপরিহার্য।

পরিমাণে সীমাবদ্ধতা

রমজানে খাবারের পরিমাণে সীমাবদ্ধতা রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইফতার ও সেহরির সময় অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। ছোট ছোট পরিমাণে খাবার খান এবং ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত খাবার হঠাৎ করে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

বেশি ক্যালোরি যুক্ত খাবার এড়ানো

রমজানে বেশি ক্যালোরি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি। বেশি ক্যালোরি যুক্ত খাবার যেমন মিষ্টি, তেলযুক্ত খাবার এবং ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন। এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে এবং স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

  • মিষ্টি খাবার থেকে দূরে থাকুন
  • তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
  • ফাস্ট ফুড পরিহার করুন

আপনার খাদ্য তালিকায় তাজা ফল, শাকসবজি এবং প্রোটিন যুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে এবং আপনাকে সুস্থ রাখবে।

আসুন, রমজানে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখি এবং অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলি। সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চললে আমরা সুস্থ ও সুখী থাকতে পারব।

রাতের খাবারের পরামর্শ

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রাতের খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাবার বেছে নিলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। রাতের খাবার হতে হবে হালকা, সুষম এবং পুষ্টিকর। এখানে কিছু রাতের খাবারের পরামর্শ দেওয়া হলো যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।

হালকা এবং সুষম খাবার

রমজানে রাতের খাবার হালকা এবং সুষম হওয়া উচিত। অনেকেই ইফতারের পর ভারী খাবার খেয়ে থাকেন। এতে হজমের সমস্যা এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। তাই হালকা খাবার খাওয়া উচিত। এতে শরীর সুস্থ থাকে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

প্রোটিন ও শাকসবজি

প্রোটিন এবং শাকসবজি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রোটিন শরীরের পেশী গঠনে সহায়ক এবং শাকসবজি বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে। রাতের খাবারে মাছ, মুরগি বা ডাল এবং সবজি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এতে শরীর পুষ্টি পায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর সতর্কতা: সুস্থ থাকার ১০টি টিপস

Credit: www.linkedin.com

দৈনন্দিন অভ্যাস

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য দৈনন্দিন অভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুস্থ থাকার জন্য কিছু সতর্কতা মেনে চলা দরকার। প্রতিদিনের কিছু সহজ অভ্যাস আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। এই অভ্যাসগুলো মেনে চললে রোজার মাসে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম

রমজানে পর্যাপ্ত বিশ্রাম অপরিহার্য। শরীরের ক্লান্তি দূর করতে ঘুম খুব জরুরি। প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ঘুম কম হলে রক্তে শর্করা বেড়ে যেতে পারে। তাই রাতে ভালোভাবে ঘুমান এবং দিনের বেলায় বিশ্রাম নিন।

মানসিক চাপ কমানো

রমজানে মানসিক চাপ কমানো গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক চাপ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সমস্যা তৈরি করতে পারে। মেডিটেশন বা প্রার্থনা করতে পারেন। এছাড়া বই পড়া, হালকা ব্যায়াম বা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন। মানসিক চাপ কমলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে।

জরুরি পরিস্থিতির প্রস্তুতি

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জরুরি পরিস্থিতির প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোজা পালনকালে ডায়াবেটিস রোগীদের কিছু ঝুঁকি থাকে। তাই কিছু জরুরি ব্যবস্থা নিতে হয়। এই প্রস্তুতিগুলি সহজে পালন করা যেতে পারে। এতে যেকোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া

রমজানে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। এটি অনেক সময় বিপজ্জনক হতে পারে। হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে দ্রুত চিনির কোনো খাবার খেতে হবে। গ্লুকোজ ট্যাবলেট রাখতে পারেন। এটি প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে কার্যকর।

জরুরি ফোন নম্বর

জরুরি পরিস্থিতির জন্য ফোন নম্বর সংরক্ষণ করুন। ডাক্তারের নম্বর, অ্যাম্বুলেন্স সেবা এবং নিকটবর্তী হাসপাতালে ফোন নম্বর সংগ্রহে রাখুন। রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই প্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরি।

পরিবারের ভূমিকা

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রোজা রাখা একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। এই সময়ে পরিবারের ভূমিকা অপরিসীম। পরিবারের সদস্যরা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে পারেন, যা তাদের সুস্থ ও নিরাপদ রাখতে সাহায্য করবে। এই ব্লগ পোস্টে, আমরা ‘পরিবারের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা করবো, যেখানে আমরা দেখবো কিভাবে পরিবারের সদস্যরা ডায়াবেটিস রোগীর পাশে থাকতে পারেন।

সমর্থন এবং সহযোগিতা

পরিবারের সদস্যদের উচিত ডায়াবেটিস রোগীর প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদান করা। তারা খাবারের সময় এবং মেনু পরিকল্পনায় অংশ নিতে পারেন। এছাড়া, ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সঠিক ওষুধ গ্রহণ, রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার জন্য উৎসাহিত করতে পারেন।

  • ওষুধ গ্রহণ: ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সঠিক সময়ে ওষুধ গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের সদস্যরা এটি নিশ্চিত করতে পারেন।
  • রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা: রোজার সময় রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করা জরুরি। পরিবারের সদস্যরা এতে সাহায্য করতে পারেন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: ব্যায়াম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। পরিবারের সদস্যরা একসাথে ব্যায়াম করতে পারেন।

মিলেমিশে খাওয়া

রমজানে সেহরি ও ইফতার একসাথে খাওয়া একটি সুন্দর সময়। পরিবারের সদস্যরা যদি ডায়াবেটিস রোগীর সাথে মিলেমিশে খেতে বসেন, তাহলে তারা অনেকটা মানসিক সমর্থন পাবেন।

খাবারের সময় খাবারের ধরন পরামর্শ
সেহরি সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর খাবার কম শর্করা ও উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার
ইফতার হালকা ও পুষ্টিকর খাবার ফলমূল, সবজি এবং পর্যাপ্ত পানি

পরিবারের সহযোগিতা ও একসাথে খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীর জন্য রমজানকে অনেক সহজ এবং আনন্দময় করে তুলতে পারে।

Frequently Asked Questions

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীরা কীভাবে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করবেন?

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীরা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করবেন। সঠিক সময়ে সুষম খাদ্য গ্রহণ জরুরি। স্বাস্থ্যকর এবং কম শর্করাযুক্ত খাবার বেছে নিন।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীরা কি উপোস থাকতে পারেন?

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীরা উপোস থাকতে পারেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ যত্ন নিতে হবে।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কী ধরনের খাবার ভালো?

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কম শর্করাযুক্ত খাবার ভালো। শাকসবজি, প্রোটিন, এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি গ্রহণ করুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের কি ওষুধের ডোজ পরিবর্তন করতে হবে?

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের ওষুধের ডোজ পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং রক্তের শর্করা নিয়মিত পরীক্ষা করুন।

Conclusion

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের বিশেষ সতর্কতা নেওয়া জরুরি। নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করুন। খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন এবং পরিমিত খাবার খান। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন। ওষুধ সময়মত গ্রহণ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন। শরীরচর্চা চালিয়ে যান, কিন্তু অতিরিক্ত পরিশ্রম করবেন না। রমজানে সুস্থ থাকতে এই ছোট ছোট পদক্ষেপগুলো নিন। আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে সচেতন থাকুন।

সবার সাথে শেয়ার করুন

DR. SOHEL RANA
DR. SOHEL RANA

হার্বাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ সোহেল রানা B.A.M.S (DU) সরকারী ইউনানী এবং আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মিরপুর-১৩ ঢাকা।

ডিএমইউ (আলট্রাসনোগ্রাফি) ঢাকা রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট আয়ুর্বেদিক ফিজিসিয়ান।

উৎপাদন এবং গভেষনা কর্মকর্তা (এলিয়েন ফার্মা লিমিটেড)

চর্ম ও যৌন, রুপ ও ত্বক, বাত ব্যাথা, গ্যাস্ট্রিক লাইফ স্টাইল আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ও হারবাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।

Articles: 237

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *