রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয় | স্বাস্থ্যকর উপায় ও টিপস

সবার সাথে শেয়ার করুন

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু বিশেষ করণীয় আছে। এই সময়ে সুস্থ থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রমজান মাসে মুসলমানরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস করেন। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। রোজার সময় রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং নিয়মিত ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। রোজার সময় ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরের চাহিদা এবং শারীরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে বিশেষ পরিকল্পনা করা উচিত। এই ব্লগে আমরা রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনার সুস্থতা নিশ্চিত করতে এই পরামর্শগুলো মেনে চলুন।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়: স্বাস্থ্যকর উপায় ও টিপস

Credit: www.ittefaq.com.bd

ডাক্তারের পরামর্শ নিন: রোজা রাখার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নিন এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত মনিটর করুন।

সুষম খাদ্য গ্রহণ: ইফতার ও সেহরিতে প্রোটিন, ফাইবার এবং কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার যেমন—লাল আটার রুটি, ওটস, ডাল, সবজি ইত্যাদি রাখুন।

পর্যাপ্ত পানি পান: ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পান করুন যাতে ডিহাইড্রেশন এড়ানো যায়।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন: রোজার সময় শরীরকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়া জরুরি।

সেহরি বাদ দেওয়া যাবে না: সেহরি বাদ দিলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে, তাই সেহরি খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।

Table of Contents

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য পরিকল্পনা

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সঠিক খাদ্য পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোজার সময় দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা ওঠানামা করতে পারে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সঠিক খাদ্য নির্বাচন এবং খাবারের সময়সূচি মেনে চলা অত্যাবশ্যক।

সঠিক খাদ্য নির্বাচন

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সঠিক খাবার বেছে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। শর্করাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। ফলমূল, শাকসবজি, এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ভালো। চর্বি কম এবং আঁশ বেশি থাকলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) খাবার বেছে নেওয়া উচিত। কম GI খাবার ধীরে ধীরে শর্করা মুক্ত করে। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। দুধ, বাদাম, এবং শস্যজাত খাবার বেছে নিন।

খাবারের সময়সূচি

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাবারের সঠিক সময়সূচি মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইফতারের সময় পুষ্টিকর এবং হালকা খাবার খাওয়া উচিত।

ইফতারে খেজুর, ফল, এবং পানি দিয়ে শুরু করুন। এরপর প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ, মুরগি, বা ডাল খেতে পারেন। ভাত বা রুটি কম পরিমাণে খান।

সেহরির সময় পুষ্টিকর এবং হালকা খাবার খান। শাকসবজি, ফলমূল, এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেছে নিন। এতে দীর্ঘক্ষণ শক্তি পাওয়া যাবে।

ইফতার ও সেহরিতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ইফতার ও সেহরিতে সঠিক খাবার নির্বাচন করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এই সময়ে বিশেষ করে পুষ্টিকর ও শক্তিবর্ধক খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

ইফতারের পুষ্টিকর খাবার

ইফতারে পুষ্টিকর খাবার নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করা যেতে পারে। এতে দ্রুত শক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া ফল ও সবজি খাওয়া যেতে পারে। ফল ও সবজি শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে।

প্রোটিনের জন্য দই বা ছানা খাওয়া যেতে পারে। এতে পেট ভরা থাকে এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে। চিনি ও তেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এগুলো রক্তে শর্করা বাড়িয়ে দিতে পারে।

সেহরিতে শক্তিবর্ধক খাবার

সেহরিতে শক্তিবর্ধক খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এতে সারাদিন শক্তি পাওয়া যায়। জটিল কার্বোহাইড্রেট যেমন ওটস, ব্রাউন রাইস, অথবা গমের রুটি খাওয়া যেতে পারে। এগুলো ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করে।

প্রোটিনের জন্য ডিম, মাছ বা মাংস খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া দুধ বা দই খাওয়া যেতে পারে। এতে প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। ডিহাইড্রেশন এড়াতে পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রমজানে শারীরিক কার্যকলাপ

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শারীরিক কার্যকলাপ অপরিহার্য। রোজার সময় শরীরকে সক্রিয় রাখা এবং সঠিক ব্যায়ামের মাধ্যমে স্বাস্থ্য বজায় রাখা যায়। তবে রমজানে শারীরিক কার্যকলাপের ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ দিক লক্ষ রাখা উচিত।

হালকা ব্যায়াম

রমজানে হালকা ব্যায়াম করলে শরীরের শক্তি ঠিক থাকে। হাঁটাহাঁটি, হালকা যোগব্যায়াম এবং স্ট্রেচিং ভালো অপশন। এই ধরনের ব্যায়াম রক্তে শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন।

ওয়ার্কআউটের সময়

রমজানে ওয়ার্কআউটের সময় সঠিকভাবে বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ইফতারের পর ওয়ার্কআউট করা সবচেয়ে ভালো। এতে শরীরে পানি এবং পুষ্টি সরবরাহ থাকে। তীব্র ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন। সংযমী ওয়ার্কআউটের জন্য ওজন তোলার পরিবর্তে কার্ডিও এবং হালকা ওজনের ব্যায়াম ভালো। শরীরের ক্লান্তি কম থাকলে সকালের দিকে হালকা ব্যায়াম করতে পারেন।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়: স্বাস্থ্যকর উপায় ও টিপস

Credit: www.dainikamadershomoy.com

রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রোজার সময় দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার কারণে রক্তে সুগারের মাত্রা ওঠানামা করতে পারে। এটি নিয়ন্ত্রণে না রাখলে নানা জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ইনসুলিন ব্যবস্থাপনা, এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এই তিনটি বিষয় যথাযথভাবে পালন করলে রোজা রাখা অনেক সহজ হয়ে উঠবে। তাহলে চলুন জেনে নেই কীভাবে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

নিয়মিত পর্যবেক্ষণ

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিয়মিত রক্তে সুগারের মাত্রা পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। রোজার আগে এবং পরে রক্তে সুগারের মাত্রা পরীক্ষা করে নিলে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক আছে কিনা।

  • সেহরি ও ইফতারের আগে: সেহরি ও ইফতারের আগে রক্তে সুগারের মাত্রা পরীক্ষা করতে ভুলবেন না। এটি আপনার দিনব্যাপী রক্তে সুগারের মাত্রা সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেবে।
  • মাঝে মাঝে: বিশেষ করে দুপুরের দিকে বা দিনের মাঝামাঝি সময়ে রক্তে সুগারের মাত্রা পরীক্ষা করলে ভালো হয়।

ইনসুলিন ব্যবস্থাপনা

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ইনসুলিন ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রমজানে এর গুরুত্ব আরও বেশি। ইনসুলিন ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো না হলে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে বা কমে যেতে পারে।

  1. ডাক্তারের পরামর্শ: রোজা রাখার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ইনসুলিনের ডোজ এবং সময় নির্ধারণ করুন।
  2. ডোজ পরিবর্তন: রমজানে ইনসুলিনের ডোজ পরিবর্তন করতে হতে পারে। সেহরি ও ইফতারের সময় সঠিক ডোজ নিতে ভুলবেন না।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এই বিষয়গুলো মেনে চলা আবশ্যক। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং সঠিক ইনসুলিন ব্যবস্থাপনা আপনার রোজাকে সহজ ও সুস্থ রাখবে। মনে রাখবেন, সুস্থ থাকাই সবকিছুর আগে।

জরুরি অবস্থার প্রস্তুতি

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু অতিরিক্ত প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কেননা রোজার সময় খাদ্যাভ্যাস এবং দৈনন্দিন রুটিনে বড় পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তনগুলি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য হাইপোগ্লাইসেমিয়া এবং হাইপারগ্লাইসেমিয়ার মতো জরুরি অবস্থার কারণ হতে পারে। তাই, রোজার সময় এগুলো মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নিতে হবে।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া

হাইপোগ্লাইসেমিয়া হল রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যন্ত কমে যাওয়া। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা হতে পারে, বিশেষত রোজার সময়। হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • ঘাম হওয়া
  • কম্পন
  • ক্ষুধা লাগা
  • দুর্বলতা
  • অবসন্নতা

এই ধরনের অবস্থায়, রোজা ভেঙ্গে দ্রুত শর্করাযুক্ত কিছু খাওয়া উচিত। যেমন একটি ফলের রস বা এক চামচ মধু।

হাইপারগ্লাইসেমিয়া

হাইপারগ্লাইসেমিয়া হল রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বেড়ে যাওয়া। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আরও একটি গুরুতর সমস্যা, বিশেষত রোজার সময়। হাইপারগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলি হলো:

  • প্রচুর পিপাসা
  • বেশি প্রস্রাব
  • ক্লান্তি
  • মাথা ঘোরা

এই পরিস্থিতিতে, রোজা ভেঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি। প্রচুর পানি পান করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনসুলিন বা ওষুধ গ্রহণ করা উচিত।

রমজানের সময় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জরুরি অবস্থার প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাইপোগ্লাইসেমিয়া এবং হাইপারগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলি চিনে রাখা এবং সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নেওয়া তাদের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়: স্বাস্থ্যকর উপায় ও টিপস

Credit: www.somoynews.tv

পানি ও তরল পানীয় গ্রহণ

রমজানের সময় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পানি ও তরল পানীয় গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে পানি ও তরল পানীয় গ্রহণ করলে শরীর সুস্থ থাকে এবং ডিহাইড্রেশন থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

প্রতিদিনের পানির পরিমাণ

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। ইফতার এবং সেহরির মধ্যে এই পরিমাণ পানি গ্রহণ করলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে। পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং মেটাবলিজমকে সক্রিয় রাখে।

স্বাস্থ্যকর পানীয়

ডায়াবেটিস রোগীরা রমজানে চিনি মুক্ত পানীয় পান করতে পারেন। যেমন, লেবুর শরবত, ডাবের পানি, এবং তাজা ফলের রস। এইসব পানীয় শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং শরীরের প্রয়োজনীয় খনিজ সরবরাহ করে।

চা বা কফি কম পান করা উচিত। কারণ, এগুলো ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, অতিরিক্ত চিনি যুক্ত পানীয় থেকে দূরে থাকতে হবে।

মনের প্রশান্তি ও মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য ও মনের প্রশান্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে, সঠিক মানসিক যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। রোজা রাখার পাশাপাশি মানসিক শান্তি বজায় রাখতে হবে।

স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট

স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট রমজানের সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবেটিস রোগীদের স্ট্রেস কমাতে নিয়মিত মেডিটেশন করতে হবে। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামও উপকারী। রাতে ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে। পরিবারের সাথে সময় কাটানো ও হালকা ব্যায়ামও স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।

ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান

রমজানে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। প্রার্থনা ও কোরান পাঠ মনকে শান্ত রাখে।

মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া ও তিলাওয়াত মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। সামাজিক সংযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানো যায়।

পরিবারের সাথে ইফতার ও সেহরি খাওয়া মানসিকভাবে ভালো রাখে। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান মানসিক প্রশান্তির অন্যতম মাধ্যম।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

রমজান মাসের রোজা রাখা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। কিন্তু, সঠিক পরিকল্পনা ও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চললে এই সময়টাও স্বাস্থ্যকর এবং নিরাপদে কাটানো সম্ভব। চলুন, জেনে নেই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ কীভাবে ডায়াবেটিস রোগীরা রমজানে সুস্থ থাকতে পারেন।

চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ

ডায়াবেটিস রোগী হিসেবে রোজা রাখার আগে আপনার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি আপনার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে রোজার জন্য উপযুক্ত কি না তা নির্ধারণ করবেন। সম্ভব হলে, আপনার ওষুধের ডোজ বা সময়সূচী পরিবর্তন করা হতে পারে।

  • রোজা রাখার উপযুক্ততা: চিকিৎসক আপনার শারীরিক সক্ষমতা যাচাই করবেন।
  • ওষুধের সময়সূচী: রোজার সময় ওষুধ কখন ও কীভাবে গ্রহণ করবেন তা নির্ধারণ করবেন।
  • হাইপো বা হাইপারগ্লাইসেমিয়া: এসব সমস্যা হলে কী করতে হবে, তার নির্দেশনা দেবেন।

ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ

ডায়েটিশিয়ান বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা আপনার খাদ্যতালিকা ঠিক করে দেবেন যাতে রোজার সময় আপনার রক্তের শর্করা স্বাভাবিক থাকে।

  1. সুষম খাদ্য: ইফতার ও সেহরির সময় পুষ্টিকর এবং সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে।
  2. কম্প্লেক্স কার্বোহাইড্রেট: সেহরিতে কম্প্লেক্স কার্বোহাইড্রেট যেমন ব্রাউন রাইস, ওটস খেতে পারেন যা ধীরে ধীরে শর্করা মুক্তি দেয়।
  3. প্রোটিন ও ফাইবার: প্রচুর প্রোটিন ও ফাইবার যুক্ত খাবার যেমন মাছ, ডাল, শাকসবজি খান।
  4. পানি পান: ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

রোজা রাখার সময় ডায়াবেটিস রোগীদের সচেতন থাকতে হবে এবং শরীরের পরিবর্তনগুলো লক্ষ করতে হবে। যদি কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা যায়, তৎক্ষণাৎ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

Frequently Asked Questions

ডায়াবেটিস হলে কিভাবে রমজান করা যায়?

ডায়াবেটিস রোগীরা রমজানে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। খাদ্য তালিকা ও ঔষধ সময়মতো গ্রহণ করুন। রক্তে শর্করা নিয়মিত পরীক্ষা করুন।

কোন খাবার খেলে ডায়াবেটিস হবে না?

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে উচ্চ ফাইবার, কম চিনি এবং কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। শাকসবজি, ফল, বাদাম এবং মাছ খেতে পারেন।

ডায়াবেটিস রোগী কি খেজুর খেতে পারবে?

ডায়াবেটিস রোগী পরিমিত খেজুর খেতে পারেন। খেজুরে প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ বেশি। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ডায়াবেটিস রোগীর জন্য কী ধরনের খাবার তালিকা আদর্শ?

ডায়াবেটিস রোগীর জন্য আদর্শ খাবার তালিকায় শাকসবজি, উচ্চ ফাইবার খাবার, কম চর্বি প্রোটিন, এবং সম্পূর্ণ শস্য অন্তর্ভুক্ত থাকে। চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।

Conclusion

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের কিছু বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি। নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করতে হবে। সুষম খাবার খেতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। ইফতার ও সেহরির সময় সঠিক খাবার নির্বাচন করতে হবে। শরীরচর্চা ও বিশ্রাম নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। রমজানে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সচেতন থাকতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা করা উচিত। উপযুক্ত যত্ন ও নিয়ম মেনে চললে রমজান উপভোগ করা সম্ভব।


সবার সাথে শেয়ার করুন

DR. SOHEL RANA
DR. SOHEL RANA

হার্বাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ সোহেল রানা B.A.M.S (DU) সরকারী ইউনানী এবং আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মিরপুর-১৩ ঢাকা।

ডিএমইউ (আলট্রাসনোগ্রাফি) ঢাকা রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট আয়ুর্বেদিক ফিজিসিয়ান।

উৎপাদন এবং গভেষনা কর্মকর্তা (এলিয়েন ফার্মা লিমিটেড)

চর্ম ও যৌন, রুপ ও ত্বক, বাত ব্যাথা, গ্যাস্ট্রিক লাইফ স্টাইল আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ও হারবাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।

Articles: 237

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *