Our Location
1310 Keraniganj, Dhaka.
Dhaka, Bangladesh.
জন্ডিস হলে করনীয় কি? প্রথমেই জানতে হবে, জন্ডিস হলো একটি রোগ যা লিভারের সমস্যার কারণে হয়। এটি হলে চোখ ও ত্বক হলুদ হয়ে যায়। জন্ডিস একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, এটি সঠিকভাবে চিকিৎসা না করালে মারাত্মক হতে পারে। বিভিন্ন কারণে জন্ডিস হতে পারে, যেমন লিভার ইনফেকশন, হেপাটাইটিস, বা গলব্লাডার সমস্যা। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা জরুরি। এই ব্লগ পোস্টে আমরা আলোচনা করব জন্ডিস হলে করনীয় কি এবং কিভাবে দ্রুত সেরে ওঠা যায়।
জন্ডিস একটি সাধারণ শারীরিক অবস্থা। এটি লিভারে বিলিরুবিন জমার কারণে ঘটে। বিলিরুবিন হল রক্তের একটি উপাদান। এটি লিভার থেকে নিঃসৃত হয়। যদি এটি শরীর থেকে সঠিকভাবে বের না হয়, ত্বক এবং চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যায়।
জন্ডিসের বিভিন্ন লক্ষণ রয়েছে। এগুলি হল:
জন্ডিসের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। নিচে কিছু কারণ উল্লেখ করা হলো:
কারণ | বিবরণ |
---|---|
লিভারের সমস্যা | লিভার সঠিকভাবে কাজ না করলে বিলিরুবিন জমা হয়। |
পিত্তনালীতে বাধা | পিত্তনালী বন্ধ হয়ে গেলে বিলিরুবিন বের হতে পারে না। |
রক্তের রোগ | রক্তের সমস্যার কারণে বিলিরুবিন বৃদ্ধি পায়। |
ভাইরাল হেপাটাইটিস | ভাইরাস সংক্রমণে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। |
আলকোহলিক লিভার ডিজিজ | অতিরিক্ত মদ্যপানে লিভার ক্ষতি হয়। |
জন্ডিস একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। জন্ডিসের প্রকারভেদ জানা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর ওপর নির্ভর করে চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারিত হয়। মূলত, জন্ডিসের দুইটি প্রধান প্রকারভেদ রয়েছে। প্রাথমিক জন্ডিস এবং দ্বিতীয়িক জন্ডিস।
প্রাথমিক জন্ডিস সাধারণত নবজাতক শিশুদের মধ্যে দেখা যায়। এটি জন্মের পরপরই হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি স্বাভাবিক এবং ক্ষণস্থায়ী। নবজাতকদের লিভার পুরোপুরি কার্যক্ষম না হওয়ায় এটি ঘটে।
প্রাথমিক জন্ডিস সাধারণত নিজে নিজেই সেরে যায়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। নবজাতকের মায়ের দুধ খাওয়ানো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি নবজাতকের লিভার কার্যক্রম উন্নত করে।
দ্বিতীয়িক জন্ডিস প্রাপ্তবয়স্ক এবং বাচ্চাদের মধ্যে দেখা যায়। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন, হেপাটাইটিস, গলব্লাডারের সমস্যা, লিভারের রোগ ইত্যাদি।
দ্বিতীয়িক জন্ডিসের ক্ষেত্রে চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসক রক্ত পরীক্ষা করে কারণ নির্ধারণ করেন। এরপর চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং সঠিক চিকিৎসা গুরুত্বপূর্ণ। এটি দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।
জন্ডিস হলে করনীয় বিষয়গুলির মধ্যে ডাক্তারি পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক চিকিৎসা এবং চিকিৎসা পরামর্শের মাধ্যমে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। নিচে কিছু দরকারি তথ্য দেওয়া হলো:
জন্ডিস হলে প্রথমেই রক্ত পরীক্ষা করানো দরকার। এই পরীক্ষার মাধ্যমে বিলিরুবিনের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
বিলিরুবিন রক্তের লাল কণিকার ভাঙন থেকে উৎপন্ন হয়। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে এর মাত্রা বেশি থাকলে, জন্ডিসের সঠিক চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন।
রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে অন্যান্য লিভার ফাংশন টেস্টও করা হয়।
এই পরীক্ষাগুলি রোগের সঠিক অবস্থান এবং চিকিৎসার ধরন নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।
জন্ডিসের চিকিৎসা নির্ভর করে রোগের কারণ এবং গুরত্বের ওপর।
চিকিৎসার সময় পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং সঠিক পুষ্টির যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করানো উচিত।
অত্যধিক মদ্যপান এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি।
সঠিক চিকিৎসা এবং নিয়ম মেনে চললে, জন্ডিস থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
জন্ডিস হলে সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। সঠিক খাবার গ্রহণ করলে শরীর দ্রুত সুস্থ হতে পারে। বিশেষ করে, যকৃতের কার্যকারিতা ভালো রাখতে এই সময়ে কিছু খাবার পরিহার এবং কিছু খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন।
খাবার | উপকারিতা |
---|---|
সবুজ শাকসবজি: | যকৃতের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং হজম প্রক্রিয়া সহজ করে। |
ফলমূল: | প্রাকৃতিক শর্করা ও ভিটামিন সরবরাহ করে, যা শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করে। |
পানি: | শরীরকে হাইড্রেট রাখে এবং টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। |
লেবুর রস: | যকৃত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং হজমে সহায়ক। |
মধু: | প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে। |
জন্ডিস একটি সাধারণ রোগ যা লিভার সমস্যা এবং বিলিরুবিনের অতিরিক্ত মাত্রার কারণে হয়। জন্ডিসের চিকিৎসায় প্রাকৃতিক উপায়গুলি অত্যন্ত কার্যকর। প্রাকৃতিক চিকিৎসার মাধ্যমে জন্ডিসকে নিরাময় করা যায়। আসুন জেনে নেই কীভাবে ঘরোয়া প্রতিকার এবং ভেষজ উপায়ে জন্ডিসের চিকিৎসা করা যায়।
জন্ডিসের জন্য ঘরোয়া প্রতিকারের মধ্যে অন্যতম প্রাকৃতিক উপাদানগুলি রয়েছে:
জন্ডিসের চিকিৎসায় কিছু ভেষজ উপায় ব্যবহার করা যেতে পারে:
ভেষজ উপাদান | উপকারিতা |
---|---|
আদা | আদা হজমে সহায়ক এবং লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। |
তুলসী পাতা | তুলসী পাতা লিভারকে সুস্থ রাখে এবং বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। |
গোলমরিচ | গোলমরিচ লিভারের কার্যক্ষমতা উন্নত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। |
মেথি | মেথি লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং হজমে সহায়ক। |
Credit: www.ekushey-tv.com
জন্ডিস হলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপ ব্যাহত হয়। শরীরের ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যায়। এই অবস্থায় পর্যাপ্ত জলপান খুব গুরুত্বপূর্ণ। জল শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
জন্ডিস হলে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমা হতে পারে। পর্যাপ্ত জলপান এই পদার্থগুলোকে শরীর থেকে বের করতে সাহায্য করে। জল লিভারকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এটি লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায়।
প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস জল পান করা উচিত। এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং লিভারের কাজকে সহজ করে। বেশি জল পান করলে লিভারের উপর চাপ কমে।
জলের পরিমাণ | উপকারিতা |
---|---|
৮-১০ গ্লাস | শরীর হাইড্রেটেড থাকে |
১২-১৪ গ্লাস | লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় |
জলপান ছাড়াও, তরল খাবার যেমন ফলের রস, ডাবের পানি এবং স্যুপ খাওয়া যেতে পারে। এগুলো শরীরকে তরল রাখতে সাহায্য করে।
জন্ডিস হলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপ ব্যাহত হয়। তাই এই সময়ে বিশ্রাম ও আরাম অত্যন্ত জরুরি। শরীর ও মনের আরাম নিশ্চিত করা রোগমুক্তির জন্য অত্যাবশ্যক।
শরীরিক বিশ্রাম জন্ডিস রোগীর জন্য অপরিহার্য। রোগীর শরীরের শক্তি কমে যায়, তাই শারীরিক বিশ্রাম নিতে হবে।
শরীরের ওপর চাপ পরিহার করতে হবে। এই সময়ে শরীরকে পুনর্গঠন ও রোগমুক্তির সুযোগ দিতে হবে।
জন্ডিসের সময় মানসিক আরাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক চাপ রোগের উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে হবে। মানসিক চাপ কমালে রোগমুক্তি ত্বরান্বিত হয়।
জন্ডিস হলে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি দ্রুত আরোগ্য লাভের সহায়ক। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও পরিষ্কার পরিবেশ নিশ্চিত করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা জরুরি:
বাসস্থানের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা জরুরি:
জন্ডিস একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি লিভারের সমস্যার কারণে হয়। বিভিন্ন কারণে জন্ডিস হতে পারে। তবে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে জন্ডিস থেকে বাঁচা সম্ভব।
জন্ডিস প্রতিরোধে টিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নির্ধারিত সময়ে টিকা নেওয়া উচিত। হেপাটাইটিস এ ও বি ভ্যাকসিন দুটি প্রধান টিকা। এগুলো লিভারকে সুরক্ষা দেয়। এই টিকাগুলো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিতে হবে।
জন্ডিস প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি অপরিহার্য। পরিষ্কার পানি পান করুন। খাবার ভালোভাবে রান্না করুন। অপরিষ্কার খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলুন। হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
সচেতনতার মাধ্যমেও জন্ডিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। পরিবারের সদস্যদেরও সচেতন করুন।
Credit: www.youtube.com
জন্ডিস হলে সঠিক চিকিৎসা পেতে প্রয়োজনীয় কিছু পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। সঠিক পরীক্ষা না করালে রোগ নির্ণয়ে ভুল হতে পারে এবং চিকিৎসা সঠিকভাবে হয় না। তাই জন্ডিসের চিকিৎসা শুরু করার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা করা জরুরি।
লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT) জন্ডিসের সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পরীক্ষার মাধ্যমে লিভারের কার্যক্ষমতা জানা যায়। এখানে কিছু প্রধান বিষয় যা এই পরীক্ষায় নির্ণয় করা হয়:
আল্ট্রাসাউন্ড লিভারের অভ্যন্তরীণ অবস্থা জানার জন্য অন্যতম প্রধান পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় লিভারের আকার, গঠন এবং কোন ব্লকেজ আছে কিনা তা জানা যায়।
পরীক্ষা | উদ্দেশ্য |
---|---|
আল্ট্রাসাউন্ড | লিভারের আকার ও গঠন নির্ণয় |
ডপলার আল্ট্রাসাউন্ড | রক্ত সঞ্চালন পরীক্ষা |
আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষার মাধ্যমে লিভারের সমস্যার পাশাপাশি পিত্তথলির পাথর বা অন্যান্য সমস্যাও নির্ণয় করা যায়।
বাচ্চাদের জন্ডিস একটি সাধারণ সমস্যা। এটি শিশুদের মধ্যে দেখা যায়। জন্ডিস হলে শরীরের ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যায়। এতে বাবা-মায়েরা খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েন। তবে সঠিক যত্ন ও চিকিৎসায় এটি নিরাময় সম্ভব।
বাচ্চাদের জন্ডিসের লক্ষণ সহজেই চেনা যায়। ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যায়। মল হলুদ বা সাদা হতে পারে। বাচ্চাদের ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। তারা দুর্বল ও ক্লান্ত বোধ করে। মলমূত্রের রঙ পরিবর্তন হয়।
বাচ্চাদের জন্ডিসের জন্য সঠিক চিকিৎসা প্রয়োজন। প্রথমেই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। বাচ্চাকে প্রচুর দুধ পান করান। রোদে কিছু সময় রাখুন। রক্ত পরীক্ষা করে বিলিরুবিনের মাত্রা জানুন। প্রয়োজনে ফটোথেরাপি করান।
যত্ন ও সঠিক চিকিৎসায় বাচ্চাদের জন্ডিস নিরাময় সম্ভব। তাই সময়মতো ব্যবস্থা নিন।
গর্ভাবস্থায় জন্ডিস একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য বিষয়। এটি মায়ের এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় জন্ডিস হলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। এখানে গর্ভাবস্থায় জন্ডিসের ঝুঁকি ও লক্ষণ, এবং সতর্কতা ও চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
গর্ভাবস্থায় জন্ডিস হলে নিম্নলিখিত ঝুঁকি ও লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে:
গর্ভাবস্থায় জন্ডিস হলে কিছু সতর্কতা এবং চিকিৎসা নেওয়া উচিত:
সতর্কতা | চিকিৎসা |
---|---|
ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন। | রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জন্ডিস নির্ণয় করুন। |
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। | প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন করুন। |
পরিমিত পানি পান করুন। | পুষ্টিকর খাবার খান। |
অ্যালকোহল এবং ধূমপান এড়িয়ে চলুন। | প্রয়োজন হলে হাসপাতালে ভর্তি হন। |
গর্ভাবস্থায় জন্ডিস হলে নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। এটি মায়ের এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জন্ডিস একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, এটি কখনো কখনো জটিলতায় রূপ নিতে পারে। জন্ডিস হলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এই কারণে, জন্ডিসের জটিলতা সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ। নিচে জন্ডিসের দুটি প্রধান জটিলতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
জন্ডিসের সবচেয়ে বড় জটিলতা হল যকৃতের সমস্যা। যকৃতের কাজ হল শরীর থেকে টক্সিন বের করা। জন্ডিস হলে যকৃতের কার্যক্ষমতা কমে যায়। ফলে শরীরে টক্সিন জমে যায়। এটি যকৃতের প্রদাহ ও সিরোসিসের কারণ হতে পারে।
জন্ডিসের কারণে শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। রক্তে অতিরিক্ত বিলিরুবিন জমা হলে মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া, জন্ডিসের ফলে হৃদযন্ত্রেও সমস্যা হতে পারে।
জন্ডিস একটি সাধারণ রোগ, কিন্তু এ নিয়ে প্রচুর মিথ প্রচলিত আছে। অনেকেই বিভিন্ন ভুল ধারণা নিয়ে বিভ্রান্ত হন। জন্ডিসের সঠিক তথ্য জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অনেকে মনে করেন, জন্ডিস হলে শুধুমাত্র মিষ্টি খাবার খাওয়া যাবে না। আবার কেউ কেউ বলেন, জন্ডিস হলে শুধুমাত্র হলুদ রঙের খাবার খেতে হবে। এইসব ধারণা সঠিক নয়।
জন্ডিসের সময় ঘরে বসে চিকিৎসা সম্ভব নয়। কিছু মানুষ বিশ্বাস করেন, কোনো ওষুধ ছাড়াই জন্ডিস ভালো হয়ে যাবে। এই ধারণাও ভুল।
জন্ডিস হলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সঠিক ওষুধ ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। প্রচুর পানি পান করা উচিত। বিশ্রাম নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
জন্ডিসের রোগীকে নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সঠিক চিকিৎসা ও যত্নে জন্ডিস পুরোপুরি সেরে যায়।
জন্ডিস একটি প্রাচীন রোগ। এটি লিভারের সমস্যার কারণে হয়। লিভারের কার্যক্ষমতা কমে গেলে জন্ডিস হয়।
এটি রক্তের বিলিরুবিন বৃদ্ধি করে। ফলে ত্বক ও চোখের রং হলুদ হয়ে যায়।
প্রাচীনকালে জন্ডিসের চিকিৎসা ছিল সীমিত।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ছিল অন্যতম।
ভেষজ ওষুধ ব্যবহার করা হতো।
যেমন: হলুদ, নিমপাতা, আনারস।
এছাড়া রক্তশোধনও ছিল একটি পদ্ধতি।
আধুনিক চিকিৎসায় জন্ডিস নিরাময়ের অনেক উপায় আছে।
বিলিরুবিন পরীক্ষা প্রথম ধাপ।
রোগ নির্ণয়ের পর সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
চিকিৎসা পদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি দ্রুত ফল দেয়।
রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।
জন্ডিস হলে জীবনযাপন কিছুটা পরিবর্তন করতে হয়। নিয়মিত জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন এনে সুস্থ থাকা সম্ভব। এখানে আমরা কর্মজীবন এবং সামাজিক জীবনে জন্ডিস হলে কী করনীয় তা আলোচনা করব।
কর্মজীবনে জন্ডিস হলে কিছু পরিবর্তন আনতে হয়। অতিরিক্ত চাপ এড়িয়ে চলা উচিত। কাজের সময়সূচি কমিয়ে নিতে পারেন। প্রচুর বিশ্রাম নিন। কাজের ফাঁকে একটু বিশ্রাম নিন। ভারী কাজ এড়িয়ে চলা উচিত।
যদি কাজের চাপ বেশি হয়, তখন সহকর্মীদের সাহায্য নিন। সুস্থ থাকলে কর্মক্ষমতা বাড়ে।
সামাজিক জীবনে জন্ডিস হলে কিছুটা পরিবর্তন করতে হবে। বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখুন। সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ কমিয়ে দিন। বেশি বিশ্রাম নিন।
বন্ধুদের সাথে সময় কাটান। স্ট্রেস কমে যাবে। সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।
Credit: dmpnews.org
জন্ডিস একটি অবস্থা যেখানে ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যায়। এটি লিভার সমস্যার কারণে হয়।
জন্ডিসের প্রধান লক্ষণ হলো ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়া। এছাড়াও ক্লান্তি, পেট ব্যথা হতে পারে।
জন্ডিস হলে চর্বিযুক্ত খাবার, অ্যালকোহল ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ানো উচিত। তাজা ফল ও শাকসবজি খাওয়া ভালো।
জন্ডিসের চিকিৎসায় লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয়। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।
জন্ডিস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর খাবার, পর্যাপ্ত পানি পান এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। অ্যালকোহল পরিহার করা ভালো।
জন্ডিস হলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। প্রচুর পানি পান করুন। পুষ্টিকর খাবার খান। বিশ্রাম নিন। অ্যালকোহল এবং ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন। নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করান। চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করুন। জন্ডিসের লক্ষণ অবহেলা করবেন না। সঠিক চিকিৎসা ও যত্নে সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। মনোবল বজায় রাখুন। শরীরের প্রতি যত্নশীল হোন। সুস্থ থাকুন।