আপনি কি বদহজমের যন্ত্রণায় ভুগছেন? প্রতিবার খাওয়ার পর কি পেট ভারী লাগে বা অস্বস্তি হয়?
যদি হ্যাঁ, তাহলে আপনি একা নন। বদহজম একটি সাধারণ সমস্যা যা আমাদের অনেকেরই দৈনন্দিন জীবনে মোকাবিলা করতে হয়। তবে চিন্তা করবেন না, কারণ আপনার জন্য রয়েছে সহজ এবং কার্যকর কিছু উপায় যা বদহজম দূর করতে সহায়ক। এই লেখায়, আমরা আলোচনা করব এমন কিছু উপায় যা আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে এবং আপনাকে আরামদায়ক অনুভূতি দেবে। আপনার সুস্থতা এবং স্বস্তির পথে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার জন্য পুরো লেখাটি পড়ুন।
বদহজমের কারণ
বদহজম হল একটি সাধারণ পেটের সমস্যা যা অনেকের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। এটি মূলত হজমের সমস্যা থেকে উদ্ভূত হয়, এবং অনেক কারণের জন্য ঘটতে পারে। বদহজমের কারণগুলি বুঝে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে প্রাকৃতিক প্রতিকার এবং পুষ্টিকর খাবার দিয়ে পেটের সমস্যার সমাধান করা যায়।
বদহজম সাধারণত খাদ্য গ্রহণের অভ্যাসের কারণে হয়। অনিয়মিত খাবার গ্রহণের সময় এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হজমের সমস্যা সৃষ্টি করে।
- অতিরিক্ত তেল-মশলা: অধিক তেল এবং মশলা পেটের সমস্যা বাড়ায়।
- কম জল গ্রহণ: পর্যাপ্ত জল না খেলে যকৃতের স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
- অনিয়মিত খাবার: খাবারের অভ্যাস যদি নিয়মিত না হয়, বদহজম হতে পারে।
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের অভাব বদহজমের অন্যতম কারণ। তাজা ফল এবং সবজি হজমের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
পাচন সমস্যা
পাচন সমস্যা বদহজমের একটি বড় কারণ। খাদ্য সঠিকভাবে হজম না হলে বদহজমের সম্ভাবনা থাকে।
| কারণ | প্রভাব |
|---|---|
| অতিরিক্ত খাবার | পাচন সমস্যা সৃষ্টি হয় |
| দ্রুত খাবার গ্রহণ | খাবারের হজমে সমস্যা হয় |
প্রাকৃতিক প্রতিকার ব্যবহার করে বদহজম দূর করা সম্ভব। সঠিক খাবারের অভ্যাস এবং যকৃতের স্বাস্থ্য বজায় রাখার মাধ্যমে পেটের সমস্যা কমানো যায়।

Credit: www.somoynews.tv
সঠিক খাদ্যাভ্যাস
বদহজম দূর করার উপায় খুঁজতে গিয়ে সঠিক খাদ্যাভ্যাসের গুরুত্ব বোঝা প্রয়োজন। খাবারের অভ্যাস সঠিক থাকলে হজমের সমস্যা কমে। এতে পেটের গ্যাস, পেটের ব্যাথা থেকে মুক্তি মেলে। ডায়েট পরিকল্পনা তৈরি করলে খাদ্যাভ্যাসে স্বাস্থ্যকর খাবার রাখা দরকার। এতে পাচনতন্ত্র শক্তিশালী হয় এবং বদহজমের সমস্যা দূরে থাকে।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হজমের সমস্যা দূর করতে সহায়ক। ফাইবার খাবারের অভ্যাসে অন্তর্ভুক্ত করলে পাচনতন্ত্র সক্রিয় থাকে। এতে বদহজমের সমস্যা কমে। ফাইবার মূলত দুটি প্রকারের হয়: দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয়।
- দ্রবণীয় ফাইবার: জল শোষণ করে এবং জেলি মত পদার্থ তৈরি করে। এই ফাইবার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- অদ্রবণীয় ফাইবার: পাচনতন্ত্রের মাধ্যমে খাবার দ্রুত সরিয়ে দেয়। এতে পেটের গ্যাস এবং পেটের ব্যাথা কম হয়।
নিচের টেবিলে কিছু ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের উদাহরণ দেওয়া হলো:
| খাবার | ফাইবারের পরিমাণ (প্রতি ১০০ গ্রাম) |
|---|---|
| ওটস | ১০ গ্রাম |
| ব্রাউন রাইস | ৩.৫ গ্রাম |
| সবজি (ব্রকোলি) | ৩.৩ গ্রাম |
প্রোবায়োটিকসের গুরুত্ব
প্রোবায়োটিকস হজমের সমস্যা দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর। এগুলো পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। প্রোবায়োটিকস খাদ্যে অন্তর্ভুক্ত করলে বদহজম কম হয়। পেটের গ্যাস কমাতে সাহায্য করে।
নিম্নে প্রোবায়োটিকস সমৃদ্ধ কিছু খাবারের উদাহরণ দেওয়া হলো:
- দই: প্রোবায়োটিকসের সহজলভ্য উৎস। হজমের সমস্যা কমাতে সহায়ক।
- কিমচি: কোরিয়ান খাবার, যা পাচনতন্ত্রের জন্য ভালো।
- কেফির: প্রোবায়োটিক ড্রিঙ্ক যা পেটের গ্যাস কমায়।
প্রোবায়োটিকস খাবারের অভ্যাসে রাখলে পেটের ব্যাথা কমে। এতে পাচনতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এই কারণে প্রোবায়োটিকসের গুরুত্ব অপরিসীম।

জলপান ও হাইড্রেশন
বদহজম দূর করার উপায়ে জলপান ও হাইড্রেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। খাদ্যগ্রহণের অভ্যাসের পাশাপাশি, পেটের আরাম ও হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত জল পান করা অপরিহার্য। জল আমাদের শরীরের বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রতিকারের মধ্যে একটি, যা বদহজমের কারণগুলি দূর করতে সহায়ক। জলপান ও হাইড্রেশন কেবলমাত্র বদহজমের সমস্যা কমায় না, এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্যও উন্নত করে।
পর্যাপ্ত জল পান
প্রতিদিন পর্যাপ্ত জল পান করা হজমের উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জল হজমের প্রক্রিয়ার একটি মূল অংশ। এটি খাদ্যকে তরল করে এবং সহজে পচানোর জন্য সহায়তা করে। এছাড়া, জল শরীর থেকে টক্সিন দূর করে, যা বদহজমের কারণ হতে পারে।
- প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস জল পান করুন।
- খাবার খাওয়ার আগে ও পরে জল পান করুন।
- ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে জল পান করুন, যা হজমের উন্নতি করে।
নিচের টেবিলটি দেখুন, যা বিভিন্ন পরিমাণ জল পানের সুবিধাগুলি প্রদর্শন করে:
| জল পানের পরিমাণ | উপকারিতা |
|---|---|
| ৮ গ্লাস | বদহজমের সমস্যা কমায়, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে |
| ১০ গ্লাস | অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে, ত্বক উজ্জ্বল রাখে |
হাইড্রেটেড থাকার উপায়
সঠিকভাবে হাইড্রেটেড থাকা বদহজমের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। শরীর হাইড্রেটেড থাকলে হজম শক্তি বাড়ায়। এটি খাবার পরবর্তী যত্নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্ট্রেস এবং হজমের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। হাইড্রেটেড থাকা স্ট্রেস কমিয়ে দেয়।
হাইড্রেটেড থাকার কিছু উপায় নিচে দেওয়া হল:
- প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে জল পান করুন।
- পুষ্টিকর খাবার খান যা জল ধারণ করে, যেমন শসা, তরমুজ।
- ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন, কারণ তারা শরীরকে ডিহাইড্রেট করে।
এছাড়া, প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে নারকেলের জল বা লেবুর রস পান করতে পারেন। এগুলো হজমের উন্নতি এবং হাইড্রেশন বজায় রাখতে সহায়ক। জলপান ও হাইড্রেশন খাদ্যগ্রহণের অভ্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়া উচিত।

শারীরিক পরিশ্রম
বদহজম একটি সাধারণ পেটের সমস্যা যা অনেকের জীবনযাত্রার পরিবর্তনকে প্রভাবিত করে। পেটের সমস্যা দূর করতে শারীরিক পরিশ্রম একটি কার্যকর উপায়। নিয়মিত ব্যায়াম করলে খাবার হজম সহজ হয় এবং হজমের সমস্যা কমে যায়। স্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের পাশাপাশি পেটের ব্যায়াম করলে বদহজম কমাতে সহায়ক হয়।
নিয়মিত ব্যায়ামের উপকারিতা
নিয়মিত ব্যায়াম বদহজম দূর করতে সহায়ক। এটি শুধু শারীরিক সুস্থতাই নয়, মানসিক সুস্থতাও নিশ্চিত করে। নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে:
- খাবার হজম সহজ হয়: ব্যায়াম পেটের পেশি শক্তিশালী করে, যা খাবার দ্রুত হজম করতে সহায়ক।
- রক্তচলাচল বৃদ্ধি পায়: শরীরে রক্তচলাচল বৃদ্ধি পেলে হজম প্রক্রিয়া দ্রুত হয়।
- শরীরের মেদ কমে: নিয়মিত ব্যায়াম করলে অতিরিক্ত মেদ কমে, যা বদহজমের সমস্যা কমাতে সহায়ক।
নিয়মিত ব্যায়াম করার জন্য প্রতিদিন ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ করা যেতে পারে। নিচের টেবিলে কিছু ব্যায়ামের ধরন উল্লেখ করা হলো:
| ব্যায়ামের ধরন | সময় |
|---|---|
| পেটের ব্যায়াম | ১০-১৫ মিনিট |
| যোগব্যায়াম | ২০-৩০ মিনিট |
| হাঁটা | ১৫-২০ মিনিট |
হালকা ব্যায়ামের প্রভাব
হালকা ব্যায়াম পেটের সমস্যা দূর করতে অনন্য। এটি শরীরকে সতেজ রাখে এবং খাবার হজমে সহায়তা করে। হালকা ব্যায়ামের কিছু প্রভাব:
- শরীরে চাপ কমে: হালকা ব্যায়াম করলে শরীরের চাপ কমে, যা হজমের সমস্যা কমাতে সহায়ক।
- শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ: শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণে থাকলে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয়।
- শরীরের মেদ কমে: হালকা ব্যায়াম করলে শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমে যায়।
হালকা ব্যায়াম করতে প্রতিদিন সকালে বা সন্ধ্যায় কিছু সময় বরাদ্দ করা যেতে পারে। এটি মানসিক চাপ কমাতে এবং পেটের সমস্যা দূর করতে সহায়ক। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের পাশাপাশি হালকা ব্যায়াম করলে বদহজম কমাতে সাহায্য করে।

মানসিক চাপের প্রভাব
বদহজম দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে হলে মানসিক চাপের প্রভাব বুঝতে হবে। মানসিক চাপ আমাদের শরীরের উপর নানা রকমের প্রভাব ফেলে। বদহজমের কারণ হিসেবে মানসিক চাপকে চিহ্নিত করা হয়। চাপের কারণে পেটের সমস্যা ও গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বৃদ্ধি পায়। তাই পেটের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে মানসিক চাপ কমানো জরুরি।
মানসিক চাপ কমানোর কৌশল
মানসিক চাপ কমাতে কিছু কার্যকর কৌশল অনুসরণ করা যেতে পারে। শারীরিক ব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কিছুটা সময় হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করুন।
- প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করুন।
- দ্রুত হাঁটার জন্য সময় দিন।
- যে কোন শারীরিক ব্যায়ামে অংশ নিন।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক। পুষ্টিকর খাবার আপনার মানসিক অবস্থাকে উন্নত করে।
| খাদ্য | উপকারিতা |
|---|---|
| ফলমূল | ভিটামিন ও ফাইবার প্রদান করে |
| সবজি | অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে |
যোগ ও মেডিটেশনের সুবিধা
যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন মানসিক চাপ কমাতে খুবই কার্যকর। যোগব্যায়াম শরীরের পেশিগুলোকে শক্তিশালী করে। মেডিটেশন মনকে শান্ত ও স্থির করে।
যোগব্যায়ামের সুবিধা:
- শরীরের নমনীয়তা বৃদ্ধি করে।
- পেশিগুলোর শক্তি বাড়ায়।
- মনকে শান্ত রাখে।
মেডিটেশনের সুবিধা:
- মনকে বিশ্রাম দেয়।
- চিন্তাশক্তি বৃদ্ধি করে।
- মনের স্থিরতা আনে।
যোগ ও মেডিটেশন মানসিক চাপ কমিয়ে বদহজম দূর করতে সাহায্য করে। তাই পেটের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে প্রতিদিন কিছুটা সময় যোগ ও মেডিটেশনে ব্যয় করুন।

প্রাকৃতিক উপায়
বদহজম একটি সাধারণ সমস্যা যা পেটের অস্বস্তি এবং ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বা অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের ফলে বদহজম হতে পারে। প্রাকৃতিক উপায়ে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব এবং এগুলি প্রায়ই সহজলভ্য এবং নিরাপদ। কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যেমন আদা, মেথি, পেপারমিন্ট এবং ক্যামোমাইল চা হজমের সমস্যা সমাধানে সহায়ক হতে পারে।
আদা ও মেথির ব্যবহার
আদা এবং মেথি প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে খাদ্য হজমের উন্নতি করতে সহায়ক। আদা হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। একটি গ্লাস গরম পানিতে কিছু আদা কুচি মিশিয়ে চা বানিয়ে পান করুন। এটি বদহজম থেকে মুক্তি পেতে সহায়ক।
- আদার টুকরো পানিতে ফুটিয়ে চা তৈরি করুন।
- মধু মিশিয়ে স্বাদ বৃদ্ধি করুন।
মেথি বদহজমের সমস্যা দূর করতে কার্যকর। মেথি বীজের মধ্যে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়ায় সহায়ক।
| উপাদান | ব্যবহার পদ্ধতি |
|---|---|
| মেথি বীজ | রাতে পানিতে ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খান। |

পেপারমিন্ট ও ক্যামোমাইল চা
পেপারমিন্ট এবং ক্যামোমাইল চা হজমের সমস্যা দূর করতে সহায়ক। পেপারমিন্টে থাকা মেনথল পেটের পেশী শিথিল করে এবং ব্যথা কমায়। এটি বদহজমের উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। একটি গ্লাস গরম পানিতে পেপারমিন্ট পাতা দিয়ে চা তৈরি করুন।
- পেপারমিন্ট পাতা গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
- পান করার আগে ছেঁকে নিন।
অপরদিকে, ক্যামোমাইল চা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়ক। এটি পেটের ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে পারে। ক্যামোমাইল ফুল গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে চা বানিয়ে পান করুন।
- ক্যামোমাইল ফুল গরম পানিতে রাখুন।
- ৫-১০ মিনিট পরে পান করুন।
এই প্রাকৃতিক উপায়গুলি খাদ্য হজমের সমস্যার সমাধানে কার্যকরী হতে পারে। নিয়মিত ব্যবহারে আপনি বদহজম থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
চিকিৎসকের পরামর্শ
বদহজম একটি সাধারণ সমস্যা যা পেটের অস্বস্তি এবং পেটের ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে। এটি দূর করার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চিকিৎসকরা সঠিক ডায়েট পরিকল্পনা এবং জীবনযাপন পরিবর্তন মাধ্যমে বদহজম কমাতে সাহায্য করেন। সঠিক চিকিৎসা এবং পুষ্টি পরামর্শের মাধ্যমে হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
প্রয়োজনীয় পরীক্ষা
বদহজমের সঠিক কারণ নির্ণয় করতে চিকিৎসকেরা কিছু প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করেন। এই পরীক্ষাগুলি রোগের গভীরতা এবং কারণ বুঝতে সহায়তা করে।
- রক্ত পরীক্ষা: এটি রোগের অন্যান্য কারণে সম্পর্কে ধারণা দেয়।
- অ্যাবডোমিনাল আল্ট্রাসাউন্ড: পেটের অঙ্গগুলির অবস্থা নিরীক্ষণ করা হয়।
- এন্ডোস্কোপি: পেটের ভিতরের অংশ দেখতে ব্যবহৃত হয়।
প্রয়োজনীয় পরীক্ষা এবং সঠিক ডায়েট পরিকল্পনা নির্ধারণের মাধ্যমে পেটের অস্বস্তি এবং বদহজম কমানো সম্ভব। পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী চিকিৎসকরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
| পরীক্ষার নাম | উদ্দেশ্য |
|---|---|
| রক্ত পরীক্ষা | অন্যান্য কারণ নির্ণয় |
| অ্যাবডোমিনাল আল্ট্রাসাউন্ড | পেটের অঙ্গ নিরীক্ষণ |
| এন্ডোস্কোপি | পেটের ভিতরের অংশ দেখা |
ঔষধের বিকল্প
বদহজম দূর করার জন্য ঔষধের বিকল্প হিসেবে প্রাকৃতিক উপায় এবং ঔষধি গাছ ব্যবহার করা যেতে পারে। অনেক সময় ঔষধ ছাড়া খাদ্য তালিকা এবং জীবনযাপন পরিবর্তনেও হজমের সমস্যা কমে যায়।
কিছু প্রাকৃতিক উপায় যা বদহজম কমাতে সহায়ক হতে পারে:
- আদা: পেটের অস্বস্তি কমাতে কার্যকর।
- পুদিনা পাতা: হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- হলুদ: প্রাকৃতিক উপাদান যা হজমে সহায়ক।
ঔষধি গাছের ব্যবহার এবং সঠিক খাদ্য তালিকা অনুসরণের মাধ্যমে বদহজম কমানো সম্ভব। ডায়েট পরিকল্পনার মাধ্যমে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। এটি পেটের অস্বস্তি এবং পেটের ব্যথা কমাতে সহায়ক।
Frequently Asked Questions
বদহজমের কারণ কী?
অজীর্ণ হয় যখন আপনার পেট খাবার ঠিকমতো হজম করতে পারে না। এটি অতিরিক্ত খাওয়া, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত বা তেলাক্ত খাবার খাওয়া, কিংবা মানসিক চাপের কারণে হতে পারে। অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে ধূমপান, অ্যালকোহল গ্রহণ এবং কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ অন্তর্ভুক্ত। এসব কারণ জানা থাকলে বদহজম নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে সহায়তা করে।
কীভাবে প্রাকৃতিকভাবে বদহজম প্রতিরোধ করা যায়?
বদহজম প্রতিরোধ করতে ধীরে ধীরে খান এবং অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন। খাদ্যতালিকায় আঁশসমৃদ্ধ খাবার যেমন ফলমূল ও সবজি যুক্ত করুন। হাইড্রেটেড থাকুন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন, যা হজমে সহায়তা করে। পাশাপাশি মানসিক চাপ কমান এবং ধূমপান ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকুন।
বদহজমের জন্য ঘরোয়া প্রতিকার কি কার্যকর?
হ্যাঁ, ঘরোয়া প্রতিকার অনেক সময় বদহজমের ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে। আদা চা, পুদিনা ও ক্যামোমাইল পেটকে শান্ত করতে সহায়ক। পানিতে মিশিয়ে অ্যাপল সাইডার ভিনেগার খাওয়া পেটের অ্যাসিড ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করতে পারে। তবে উপসর্গ দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
স্ট্রেস কি বদহজমের কারণ হতে পারে?
হ্যাঁ, মানসিক চাপ হজম প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে এবং বদহজম সৃষ্টি করতে পারে। এটি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। মেডিটেশন, ব্যায়াম বা রিলাক্সেশন টেকনিকের মাধ্যমে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করলে হজমশক্তি উন্নত হয় এবং বদহজম কমে যায়।
Conclusion
বদহজম দূর করা আসলে সহজ। জীবনযাত্রায় ছোট পরিবর্তন আনুন। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস করুন। প্রচুর পানি পান করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। স্ট্রেস কমানোর চেষ্টা করুন। প্রাকৃতিক উপায়গুলি কাজে লাগান। পুদিনা বা আদার চা পান করুন। এগুলি বদহজম কমাতে সহায়ক। ওষুধের বিকল্প খুঁজুন। সবসময় ডাক্তারের পরামর্শ নিন। খেয়াল রাখুন আপনার শরীরের প্রতি। পরিবর্তনগুলি ধীরে ধীরে করুন। ফলাফল দেখুন। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। নিয়মিত অভ্যাস করুন। বদহজম আর সমস্যা হবে না। সহজ আর কার্যকর উপায়ে জীবনযাপন করুন।




