রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকা | স্বাস্থ্যকর ও সহজ উপায়

সবার সাথে শেয়ার করুন

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাবার নির্বাচন করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। রোজার সময় সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাবারের তালিকা তৈরি করা সহজ নয়। রোজা রাখার সময় রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন। তাই, খাদ্যের তালিকা এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল থাকে। সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে রমজানের রোজা স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদে পালন করা সম্ভব। এই ব্লগে, আমরা আলোচনা করব কীভাবে ডায়াবেটিস রোগীরা রমজানে তাদের খাবার নির্বাচন করবেন। সঠিক খাদ্য পরিকল্পনা ও পরামর্শের মাধ্যমে রোজা পালন সহজ ও স্বাস্থ্যকর হবে।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সুষম ও পুষ্টিকর খাবার অপরিহার্য। ইফতারে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার যেমন সবজি, ফলমূল এবং আঁশযুক্ত খাবার রাখুন।

Table of Contents

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য পরিকল্পনা

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য পরিকল্পনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাদ্য পরিকল্পনা না থাকলে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হতে পারে। রমজানে দিনের বেশিরভাগ সময় না খেয়ে থাকতে হয়। এতে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু বিশেষ খাদ্য পরিকল্পনা প্রয়োজন। এই পরিকল্পনা রোগীদের সুস্থ রাখতে সহায়ক হবে।

পরিকল্পনার গুরুত্ব

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রমজানে খাদ্য পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পরিকল্পনা রোগীদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে। রোজার সময় দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে রক্তের শর্করা কমে যেতে পারে। আবার ইফতারের সময় অতিরিক্ত খেলে শর্করা বেড়ে যেতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা এসব সমস্যা এড়াতে সহায়ক হবে।

সঠিক খাবার বাছাই

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সঠিক খাবার বাছাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেহরিতে প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। যেমন, ডাল, সবজি, সেদ্ধ ডিম। ইফতারে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। যেমন, শসা, টমেটো, লেটুস। মিষ্টি ও ভাজা খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। পর্যাপ্ত পানি পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকা: স্বাস্থ্যকর ও সহজ উপায়

Credit: diabeat.com.bd

ইফতার ও সেহরি: সুষম খাদ্য তালিকা

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাদ্য তালিকা তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইফতার ও সেহরি সুষম খাদ্য তালিকা তৈরি করা হলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। সঠিকভাবে পরিকল্পিত খাদ্য তালিকা ডায়াবেটিস রোগীদের সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়ক। এবার আমরা জানবো কীভাবে ইফতার ও সেহরিতে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা যায়।

ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার

ইফতার হলো রমজানের দিনের প্রথম খাবার, যা সারাদিনের উপবাসের পর গ্রহণ করা হয়। ইফতারের সময় সঠিক খাবার নির্বাচন করা জরুরি। এখানে কিছু স্বাস্থ্যকর ইফতার আইডিয়া দেওয়া হলো:

  • খেজুর: প্রচুর পুষ্টি এবং দ্রুত শক্তি প্রদান করে।
  • শাকসবজি: সালাদ, শসা, টমেটো, গাজর ইত্যাদি শাকসবজি খাদ্যতালিকায় রাখুন।
  • প্রোটিন: বাদাম, মটরশুঁটি, ছোলা বা সয়াবিন গ্রহণ করুন।
  • স্বাস্থ্যকর তরল: লেবুর শরবত, ডাবের পানি বা হালকা স্যুপ।
  • ফলমূল: তাজা ফল যেমন আপেল, কমলা, পেঁপে ইত্যাদি রাখুন।

এছাড়া, ইফতারে তেল-চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। অতিরিক্ত মিষ্টি খাবারও রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, তাই এগুলো থেকে দূরে থাকুন।

সেহরিতে পুষ্টিকর খাদ্য

সেহরি হলো দিনের শেষ খাবার, যা দিনভর রোজা রাখার জন্য শক্তি যোগায়। সেহরিতে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা রোজাদারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেহরির জন্য কিছু পুষ্টিকর খাবারের তালিকা নিচে দেওয়া হলো:

  1. উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার: ওটমিল, ব্রাউন ব্রেড, চিড়ার মুড়ি ইত্যাদি।
  2. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: ডিম, মাছ, মুরগির মাংস, ডাল ইত্যাদি।
  3. দুগ্ধজাত পণ্য: দই, দুধ, পনির ইত্যাদি।
  4. সবজি: শাক, ব্রকোলি, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি সবজি।
  5. ফলমূল: কলা, আপেল, বেরি ইত্যাদি।

সেহরিতে পর্যাপ্ত পানি পান করতে ভুলবেন না, কারণ এটি শরীরকে হাইড্রেট রাখবে। অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার এবং অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সুষম খাদ্য তালিকা অনুসরণ করলে শরীর সুস্থ থাকবে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ইফতার ও সেহরিতে সঠিক খাবার নির্বাচন করে সুস্থতা বজায় রাখুন এবং রমজানের পবিত্র মাসটি উপভোগ করুন।

শর্করার নিয়ন্ত্রণ

Anna-Fruit
Anna-Fruit

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শর্করার নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোজার সময় খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসে। তাই শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সঠিক খাবার নির্বাচন করতে হবে। সঠিক শর্করাযুক্ত খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক থাকবে এবং রোজা রাখা সহজ হবে।

কম শর্করাযুক্ত খাবার

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের কম শর্করাযুক্ত খাবার বেছে নেওয়া উচিত। যেমন সবজি, বাদাম, বীজ এবং কম শর্করাযুক্ত ফল। এ ধরনের খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না।

সবজির মধ্যে শসা, মুলা, কপি এবং শাকসবজি খাওয়া যেতে পারে। বাদামের মধ্যে আমন্ড এবং আখরোট পুষ্টিকর এবং কম শর্করাযুক্ত। কম শর্করাযুক্ত ফলের মধ্যে আপেল, কমলা এবং বেরি খাওয়া যেতে পারে।

শর্করা নিয়ন্ত্রণের কৌশল

রমজানে শর্করার নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু কৌশল অনুসরণ করতে হবে। প্রথমত, ছোট ছোট খাবার খাওয়া উচিত। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকবে।

দ্বিতীয়ত, প্রোটিন এবং আঁশযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া উচিত। প্রোটিন এবং আঁশ শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। তৃতীয়ত, পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। পানি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

চতুর্থত, সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করা উচিত। সাহরি এবং ইফতারের সময় সঠিক খাবার নির্বাচন করা জরুরি।

প্রোটিন ও ফাইবারের ভূমিকা

fat-free-foods
fat-free-foods

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সঠিক খাবার নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিন ও ফাইবার এই দুইটি উপাদান খাদ্য তালিকায় থাকা অত্যাবশ্যক। এরা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরতি রাখে। আসুন দেখি, প্রোটিন ও ফাইবার কীভাবে সাহায্য করতে পারে।

প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিন রক্তের শর্করা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে এবং পেশী গঠনে সহায়তা করে। নিচে কিছু প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারের তালিকা দেওয়া হলো:

  • ডিম: প্রোটিনের একটি উৎকৃষ্ট উৎস, যা সেহরিতে খেতে পারেন।
  • মুরগির মাংস: চর্বি কম এবং প্রোটিন বেশি, ইফতারে খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন।
  • মাছ: বিশেষ করে তেলযুক্ত মাছ যেমন স্যামন, টুনা, এগুলো প্রোটিন সমৃদ্ধ।
  • দই: প্রোটিন এবং প্রোবায়োটিক উভয়েরই উৎকৃষ্ট উৎস।
  • শিমের দানা: ভেজিটেরিয়ানদের জন্য প্রোটিনের ভালো বিকল্প।

ফাইবারের গুরুত্ব

ফাইবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খেলে দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা থাকে, ফলে আপনি কম খাবেন এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

  1. শাকসবজি: যেমন পালং শাক, ব্রকোলি, গাজর।
  2. ফলমূল: যেমন আপেল, বেরি, নাশপাতি।
  3. পুরো শস্য: যেমন ওটস, ব্রাউন রাইস, পুরো গমের রুটি।
  4. ডাল: যেমন ছোলা, মসুর, মুগ।
  5. বাদাম: যেমন আমন্ড, আখরোট।

রমজানে স্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচন করে আপনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন এবং সুস্থ থাকতে পারেন। তাই প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবারকে আপনার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।

হাইড্রেশন: পানির গুরুত্ব

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য হাইড্রেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পরিমাণে পানি পান করলে শরীরের রক্তে শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণে থাকে। রোজা রাখার সময় দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার কারণে শরীরে পানির ঘাটতি হতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় পানির মাত্রা ঠিক রাখা জরুরি।

পানি পানের নিয়ম

রমজানে ইফতার ও সেহরির সময় পর্যাপ্ত পানি পান করুন। একবারে বেশি পানি পান না করে, সময় ভাগ করে ছোট ছোট পরিমাণে পান করুন। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। অতিরিক্ত মিষ্টি বা কফি জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলুন।

অন্যান্য হাইড্রেটিং খাদ্য

পানি ছাড়াও বিভিন্ন ফল ও সবজি রয়েছে যা শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে। তরমুজ, শশা, কমলালেবু, এবং স্ট্রবেরি অত্যন্ত হাইড্রেটিং। ইফতারে এই ফলগুলি অন্তর্ভুক্ত করুন।

ইফতারে স্যুপ বা তরল জাতীয় খাবার খান। এসব খাবার শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করে।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকা: স্বাস্থ্যকর ও সহজ উপায়

Credit: www.youtube.com

ফল ও সবজি: পুষ্টির উৎস

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সঠিক খাদ্য তালিকা অনুসরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফল ও সবজি হল পুষ্টির প্রধান উৎস। এই দুটি খাবারই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। আসুন জেনে নেই ফল ও সবজির নানা উপকারিতা।

ফল খাওয়ার উপকারিতা

ফল আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে। বিশেষ করে, আপেল, নাশপাতি ও বেদানা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। তরমুজ ও পেঁপেও খুবই উপকারী। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। ফাইবার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। ফল খাওয়ার মাধ্যমে রমজানে শরীর সতেজ থাকে।

সবজি খাওয়ার উপকারিতা

সবজি বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ। বিশেষ করে, শাকসবজি, ব্রকলি ও গাজর শরীরে ভিটামিন এবং আয়রন সরবরাহ করে। এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। শাকসবজি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। এতে প্রচুর ফাইবার থাকে। ফলে, রমজানে সবজি খেলে শরীর সুস্থ থাকে।

fat-free-foods
fat-free-foods

রোজার সময় শারীরিক ক্রিয়াকলাপ

রমজান মাসে রোজা রাখার সময় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শারীরিক ক্রিয়াকলাপ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অনেকেই মনে করেন রোজা রাখার সময় শারীরিক কার্যকলাপ কমিয়ে দেওয়া উচিত। তবে, সঠিক পরিকল্পনা ও নিয়ম মেনে চললে শারীরিক কার্যকলাপ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে। আসুন, জেনে নিই রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের শারীরিক ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে।

হালকা ব্যায়াম

রমজান মাসে রোজা রাখার সময় ডায়াবেটিস রোগীরা হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। হালকা ব্যায়াম যেমন হাঁটা, যোগব্যায়াম, এবং স্ট্রেচিং রোজার সময় করতে কোনো অসুবিধা নেই। এই ধরনের ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

  • হাঁটা: প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট হেঁটে শরীরকে সক্রিয় রাখুন। হাঁটা সহজ এবং সবার জন্য উপযোগী।
  • যোগব্যায়াম: যোগব্যায়াম মন ও শরীরকে শান্ত রাখে। প্রতিদিন সকালে বা সন্ধ্যায় কিছুক্ষণ যোগব্যায়াম করতে পারেন।
  • স্ট্রেচিং: স্ট্রেচিং শরীরের পেশী শিথিল করে। প্রতিদিন কিছুক্ষণ স্ট্রেচিং করুন।

শারীরিক ক্রিয়াকলাপের সময়

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের শারীরিক ক্রিয়াকলাপের সময় খেয়াল রাখতে হবে কিছু বিষয়। রোজার সময়ে শরীরের পানির ঘাটতি হতে পারে, তাই অতিরিক্ত পরিশ্রম এড়িয়ে চলুন। এছাড়া, শারীরিক ক্রিয়াকলাপের সময় রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন।

  1. শারীরিক ক্রিয়াকলাপের সময় পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
  2. ব্যায়াম করার সময় হালকা এবং আরামদায়ক পোশাক পরিধান করুন।
  3. শরীরের সঙ্কেতগুলি মনোযোগ দিয়ে শুনুন। যদি দুর্বল বা মাথা ঘোরা মনে হয়, তখন বিশ্রাম নিন।
  4. যদি সম্ভব হয়, সকালে বা সন্ধ্যায় ব্যায়াম করুন। এই সময়গুলোতে তাপমাত্রা কম থাকে এবং শরীর আরও আরামদায়ক থাকে।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শারীরিক ক্রিয়াকলাপ গুরুত্বপূর্ণ হলেও, সবকিছুই সঠিক পরিকল্পনা ও নিয়ম মেনে করা উচিত। রোজার সময় সুস্থ ও সক্রিয় থাকার জন্য এই পরামর্শগুলি মেনে চলুন। আল্লাহ আমাদের সকলকে সুস্থ রাখুন।

রক্তের গ্লুকোজ পর্যবেক্ষণ

রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের গ্লুকোজ পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। উপবাসের সময় রক্তের গ্লুকোজের স্তর ওঠানামা করতে পারে। সঠিক পর্যবেক্ষণ না করলে গুরুতর সমস্যা হতে পারে।

নিয়মিত পরীক্ষা

রমজানে নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করা প্রয়োজন। অন্তত দিনে দুইবার পরীক্ষা করা উচিত। সাহরি ও ইফতারের আগে পরীক্ষা করলে ভালো হয়। পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে খাবারের তালিকা ঠিক করতে হবে।

পর্যবেক্ষণের গুরুত্ব

রক্তের গ্লুকোজ পর্যবেক্ষণ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি রক্তের শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে উপবাসের সময় রক্তের শর্করা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। ফলস্বরূপ, ডায়াবেটিসের জটিলতা কমে যায়।

Frequently Asked Questions

কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না?

ডায়াবেটিস এড়াতে পুষ্টিকর খাবার খান। প্রচুর শাকসবজি, ফল, বাদাম, এবং পুরো শস্য খান। চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।

টাইপ ১ ডায়াবেটিস রোগী কি রমজানে রোজা রাখতে পারবে?

টাইপ ১ ডায়াবেটিস রোগীর রোজা রাখা ঝুঁকিপূর্ণ। ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া রোজা রাখা উচিত নয়।

ডায়াবেটিস রোগী কি খেজুর খেতে পারবে?

হ্যাঁ, ডায়াবেটিস রোগীরা সীমিত পরিমাণে খেজুর খেতে পারেন। খেজুরে প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ বেশি থাকায় পরিমিত খাওয়া উচিত।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর কী কী করণীয়?

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করা, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি।

Conclusion

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাবার নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাদ্যতালিকা রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। সবজি, প্রোটিন এবং কম শর্করা যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। পর্যাপ্ত পানি পান করা আবশ্যক। খাবারের সময়সূচি মেনে চলুন। ইফতার ও সেহরির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখুন। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সঠিক পরিকল্পনা সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস রোগীরা সচেতন হয়ে রোজা রাখতে পারেন। আপনার স্বাস্থ্য সবসময় অগ্রাধিকার দিন। সতর্কতা অবলম্বন করুন এবং সুস্থ থাকুন।

সবার সাথে শেয়ার করুন

DR. SOHEL RANA
DR. SOHEL RANA

হার্বাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ সোহেল রানা B.A.M.S (DU) সরকারী ইউনানী এবং আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মিরপুর-১৩ ঢাকা।

ডিএমইউ (আলট্রাসনোগ্রাফি) ঢাকা রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট আয়ুর্বেদিক ফিজিসিয়ান।

উৎপাদন এবং গভেষনা কর্মকর্তা (এলিয়েন ফার্মা লিমিটেড)

চর্ম ও যৌন, রুপ ও ত্বক, বাত ব্যাথা, গ্যাস্ট্রিক লাইফ স্টাইল আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ও হারবাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।

Articles: 232

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *