Our Location

1310 Keraniganj, Dhaka.
Dhaka, Bangladesh.

কামিনী ফুল

কামিনী ফুল (Murraya paniculata) প্রকৃতির এক মনোমুগ্ধকর উপহার। এর স্নিগ্ধ সাদা ফুল এবং মোহনীয় সুগন্ধ একে বাগানপ্রেমীদের প্রিয় করে তুলেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে শুরু করে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার উষ্ণ অঞ্চলগুলোতে এই চিরসবুজ গাছ ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। কামিনী ফুল শুধু যে সৌন্দর্য এবং সুবাসে মনোমুগ্ধ করে তা নয়, এর পরিবেশগত এবং ঔষধি গুণাবলীও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই গাছটির চাষ করা সহজ এবং এটি বিভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। এছাড়াও কামিনী ফুল স্থানীয় সংস্কৃতি, আচার-অনুষ্ঠান এবং সাহিত্যেও গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। সুগন্ধি, ঔষধি উপাদান, এবং সৌন্দর্যবর্ধনের মতো বহুমুখী ব্যবহারের জন্য কামিনী ফুলকে বিশ্বব্যাপী প্রশংসা করা হয়।

কামিনী ফুলের পরিচিতি ও বৈজ্ঞানিক নাম

কামিনী ফুল (Kamini Flower) সৌন্দর্য এবং সুবাসের জন্য পরিচিত একটি জনপ্রিয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Murraya paniculata। এটি Rutaceae পরিবারভুক্ত এবং এটি গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে খুবই প্রচলিত। কামিনী গাছ সাধারণত ছোট বা মাঝারি আকৃতির হয় এবং এটি একটি চিরসবুজ গাছ। এর পাতাগুলি চকচকে ও সবুজ রঙের, যা গাছটিকে সবসময় সতেজ রাখে।

কামিনী ফুলের নামটির সঙ্গে অনেক সংস্কৃতিগত এবং ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস জড়িত। বিভিন্ন অঞ্চলে এটি ভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন “মারিয়াম জেসমিন” বা “চায়না বক্স।” এটি প্রধানত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে পাওয়া যায়।

কামিনী ফুলের গঠন ও বৈশিষ্ট্য

কামিনী ফুল ছোট এবং সাদা রঙের হয়। এর পাঁপড়িগুলো নরম এবং মসৃণ, যা এর স্নিগ্ধ সৌন্দর্য বাড়ায়। একটি পূর্ণবয়স্ক গাছে অসংখ্য ফুল ফোটে, যা পরিবেশকে মনোমুগ্ধকর করে তোলে। ফুলের আকার সাধারণত ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়।

এর অন্যতম আকর্ষণ এর ছোট গোলাকার ফল, যা প্রথমে সবুজ এবং পরে লালচে রঙ ধারণ করে। এই ফল পাখিদের জন্য একটি প্রাকৃতিক খাদ্য হিসেবে কাজ করে। কামিনী গাছের কাঠ শক্ত এবং টেকসই, যা ছোটখাটো কাঠামো তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

কামিনী ফুলের সুগন্ধ: প্রকৃতির এক আশীর্বাদ

kamini flower

কামিনী ফুলের প্রধান আকর্ষণ এর অনন্য সুগন্ধ। সন্ধ্যার সময় এই ফুল ফোটে এবং আশপাশে মিষ্টি গন্ধ ছড়ায়। এই সুবাস শুধু মানুষের মনকেই প্রফুল্ল করে না, মৌমাছি এবং প্রজাপতিকেও আকৃষ্ট করে।

অনেকে কামিনী ফুলকে বাগানের জন্য পছন্দ করেন কেবল এর সুগন্ধের কারণে। এটি প্রাকৃতিক সুগন্ধি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। পারফিউম এবং এয়ার ফ্রেশনার তৈরির জন্য এর নির্যাস একটি মূল্যবান উপাদান।

কামিনী গাছের বৃদ্ধি ও আকৃতি

কামিনী গাছ একটি দ্রুত বৃদ্ধি সম্পন্ন উদ্ভিদ। এটি সাধারণত ৬ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। তবে নিয়মিত ছাঁটাই করলে এটি ছোট আকারে রাখা সম্ভব, যা বাগানের শোভা বৃদ্ধি করে।

গাছটি সাধারণত গোলাকার এবং ঘন আকার ধারণ করে। এর পাতা সবসময় সতেজ এবং চকচকে থাকে। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে গাছের বৃদ্ধি দ্রুত হয়। এটি বিভিন্ন ধরণের মাটিতে সহজেই জন্মায়, তবে ভালো নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং রোদযুক্ত স্থান এর জন্য আদর্শ।

কামিনী ফুলের আবাসস্থল ও অঞ্চলভিত্তিক বিস্তার

কামিনী গাছ প্রধানত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ভারত, চীন এবং অস্ট্রেলিয়ার গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে বিস্তৃত। এটি উষ্ণ আবহাওয়ায় দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং বিভিন্ন ধরনের মাটিতে জন্মাতে সক্ষম।

এটি শহরাঞ্চলে বাগান, সড়কের ধারে এবং পার্কে শোভা বর্ধনে ব্যবহৃত হয়। গ্রামীণ এলাকায় এর সৌন্দর্য এবং ঘ্রাণের জন্য এটি ঘরের সামনে রোপণ করা হয়। অঞ্চলভেদে এর চাষাবাদের পদ্ধতি সামান্য ভিন্ন হতে পারে।

কামিনী ফুলের প্রজাতি: বিভিন্ন বৈচিত্র্য

কামিনী ফুলের বেশ কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে, যা আকার, পাতা, এবং ফুলের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে পার্থক্য করা যায়। প্রধানত, কামিনী ফুলের প্রজাতিগুলি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতীয় উপমহাদেশে পাওয়া যায়।

প্রধান প্রজাতিগুলি হলো:

  1. Murraya paniculata – সাধারণ কামিনী ফুল। এটি ছোট সাদা ফুল এবং ঘন পাতা বিশিষ্ট।
  2. Murraya exotica – এটির পাতাগুলি তুলনামূলক বড় এবং ঘন। বাগানে শোভা বৃদ্ধিতে এটি ব্যবহৃত হয়।
  3. Murraya koenigii – এটি সাধারণত “কড়ি পাতা” নামে পরিচিত। যদিও এটি কামিনীরই একটি প্রজাতি, তবে এটি রান্নায় ব্যবহৃত হয়।

এই প্রজাতিগুলি তাদের সৌন্দর্য ও ব্যবহারিক বৈশিষ্ট্যের কারণে বাগানপ্রেমীদের মধ্যে জনপ্রিয়।


কামিনী গাছের পরিচর্যার উপায়

কামিনী গাছের সঠিক পরিচর্যা এর দীর্ঘস্থায়ী বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। এটি একটি চিরসবুজ গাছ হওয়ায় নিয়মিত পরিচর্যা করা সহজ।

পরিচর্যার পদ্ধতি:

  • পানি দেওয়া: সপ্তাহে ২-৩ বার পানি দিন। গরমকালে একটু বেশি প্রয়োজন হতে পারে।
  • ছাঁটাই: গাছের আকৃতি ধরে রাখতে নিয়মিত ছাঁটাই করুন। এটি ফুলের উৎপাদন বাড়ায়।
  • পোকামাকড় প্রতিরোধ: কীটনাশক ব্যবহার করুন, বিশেষত মাকড়সা এবং শোষক পোকা প্রতিরোধে।

প্রতিটি মৌসুমে যত্নের সামান্য পরিবর্তন গাছকে স্বাস্থ্যবান রাখতে সহায়তা করে।


কামিনী ফুলের রোপণ: সহজ পদ্ধতি

কামিনী ফুলের চারা রোপণ বেশ সহজ এবং এটি বাগান কিংবা টবে রোপণ করা যায়। সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে গাছটি দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

রোপণের ধাপসমূহ:

  1. একটি ভালো নিষ্কাশন ব্যবস্থা যুক্ত মাটি বেছে নিন।
  2. চারা লাগানোর আগে মাটিতে সার মিশিয়ে নিন।
  3. গাছটি এমন স্থানে লাগান, যেখানে পর্যাপ্ত রোদ আসে।
  4. রোপণের পরপরই পানি দিন এবং মাটি আর্দ্র রাখুন।

টবে রোপণ করলে নিয়মিত সার প্রয়োগ করুন। এতে গাছটি দীর্ঘদিন সতেজ থাকবে।


কামিনী গাছের জন্য প্রয়োজনীয় মাটি ও আবহাওয়া

কামিনী গাছের বৃদ্ধি নির্ভর করে সঠিক মাটি ও আবহাওয়ার উপর। এটি উষ্ণ ও সুনির্দিষ্ট জলবায়ুতে সেরা ফলন দেয়।

মাটির ধরন:

  • হালকা বেলে দোআঁশ মাটি কামিনীর জন্য আদর্শ।
  • মাটিতে জল নিষ্কাশনের সুবিধা থাকা প্রয়োজন।
  • পিএইচ মাত্রা ৬.০-৭.৫ এর মধ্যে হলে ভালো হয়।

আবহাওয়া:

  • উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া কামিনী গাছের জন্য উপযুক্ত।
  • সরাসরি সূর্যালোক প্রয়োজন। তবে গাছটি আংশিক ছায়ায়ও বৃদ্ধি পায়।

কামিনী গাছের সার ব্যবস্থাপনা

সঠিক সার ব্যবস্থাপনা কামিনী গাছের ফুল উৎপাদন ও বৃদ্ধি বাড়ায়। জৈব এবং রাসায়নিক উভয় সারই ব্যবহৃত হতে পারে।

সার প্রয়োগের টিপস:

  1. জৈব সার: গোবর সার বা কম্পোস্ট প্রয়োগ করুন।
  2. রাসায়নিক সার: নিয়মিত নাইট্রোজেন, ফসফরাস, এবং পটাশিয়াম (NPK) সার দিন।
  3. মৌসুমি প্রয়োগ: বর্ষার আগে সার প্রয়োগ গাছের জন্য উপকারী।

কামিনী ফুলে মৌমাছি ও প্রজাপতির আকর্ষণ

kamini flower

কামিনী ফুলের মিষ্টি সুগন্ধ এবং নেকটার মৌমাছি ও প্রজাপতিকে সহজেই আকর্ষণ করে। এই পোকামাকড় ফুলের পরাগায়নে সহায়ক।

কামিনী গাছের আশপাশে প্রজাপতির উপস্থিতি বাগানের পরিবেশকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


কামিনী ফুলের ঔষধি গুণাবলী

কামিনী ফুল শুধু সুন্দর নয়, এর ঔষধি গুণাবলীর জন্যও পরিচিত। আয়ুর্বেদ ও হারবাল চিকিৎসায় এটি ব্যবহৃত হয়।

ঔষধি ব্যবহার:

  • পাতা এবং ফুলের নির্যাস মাথাব্যথা এবং আর্থ্রাইটিস কমাতে সহায়ক।
  • এর পাতা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানে ভরপুর।
  • ফুলের সুগন্ধ মানসিক চাপ হ্রাসে কার্যকর।

প্রাকৃতিক চিকিৎসার জন্য এটি একটি নিরাপদ এবং কার্যকর উদ্ভিদ।

কামিনী ফুলের সুগন্ধি তৈরিতে ব্যবহার

কামিনী ফুলের মনমুগ্ধকর সুগন্ধ প্রাকৃতিক সুগন্ধি তৈরিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এর ঘ্রাণ এতই আকর্ষণীয় যে এটি বহু যুগ ধরে সুগন্ধি শিল্পে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

সুগন্ধি শিল্পে ব্যবহার:

  1. অ্যাটার এবং পারফিউম: কামিনী ফুলের নির্যাস দিয়ে তৈরি পারফিউম এবং অ্যাটার বাজারে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
  2. এয়ার ফ্রেশনার: এর ঘ্রাণ ঘরের পরিবেশ সতেজ এবং স্নিগ্ধ রাখে।
  3. প্রাকৃতিক তেল: কামিনী ফুল থেকে তৈরি তেল আরোমাথেরাপিতে ব্যবহার করা হয়। এটি মানসিক চাপ হ্রাস করতে সাহায্য করে।

বাণিজ্যিকভাবে এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এটি স্থানীয় কৃষকদের জন্য আয়ের একটি বড় উৎস।


কামিনী ফুলের ঐতিহ্যবাহী ব্যবহার

কামিনী ফুলের ব্যবহার কেবলমাত্র সৌন্দর্য এবং সুগন্ধে সীমাবদ্ধ নয়। এর ঐতিহ্যবাহী ব্যবহারও উল্লেখযোগ্য।

ঐতিহ্যবাহী উপায়ে ব্যবহার:

  1. বিয়ের সাজসজ্জা: কামিনী ফুলের মালা এবং সাজ সজ্জায় ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।
  2. ধর্মীয় অনুষ্ঠানে: পূজা এবং আচার-অনুষ্ঠানে এটি পবিত্র ফুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
  3. গৃহসজ্জা: বাড়ি সাজানোর জন্য এর ফুল এবং গাছ উভয়ই ব্যবহৃত হয়।

এর ঐতিহ্যবাহী ব্যবহার আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।


কামিনী ফুলের সাথে সংস্কৃতি ও আচার-অনুষ্ঠান

কামিনী ফুলের স্নিগ্ধ ঘ্রাণ এবং সৌন্দর্য অনেক সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সাংস্কৃতিক প্রভাব:

  • উৎসবের অংশ: বিভিন্ন উৎসব এবং অনুষ্ঠানে কামিনী ফুল অপরিহার্য।
  • প্রীতির প্রতীক: কামিনী ফুল ভালোবাসা এবং শান্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।
  • গল্প ও সাহিত্য: কামিনী ফুলের সৌন্দর্য এবং ঘ্রাণ কবিতা ও গল্পে অনুপ্রেরণা যোগায়।

অনেক গ্রামীণ এলাকায় এটি শুভ ফলাফল ও সমৃদ্ধির প্রতীক।


কামিনী ফুলের পরিবেশগত উপকারিতা

কামিনী ফুল শুধুমাত্র দৃষ্টিনন্দন নয়, পরিবেশের জন্যও অত্যন্ত উপকারী।

উপকারিতাসমূহ:

  1. পরিবেশ শীতল রাখা: এর ঘন পাতা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  2. বায়ু পরিশোধন: কামিনী গাছ বায়ু থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে এবং অক্সিজেন সরবরাহ করে।
  3. জীববৈচিত্র্য রক্ষা: এটি মৌমাছি, প্রজাপতি এবং অন্যান্য পোকামাকড়ের জন্য খাদ্য হিসেবে কাজ করে।

বাগানে কামিনী গাছ রোপণ করলে পরিবেশ সুরক্ষায় ভূমিকা রাখা সম্ভব।


কামিনী ফুলের চারা উৎপাদন ও বিক্রয়

কামিনী ফুলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, যা এর চারা উৎপাদন ও বিক্রয়কে লাভজনক করে তুলেছে।

উৎপাদন প্রক্রিয়া:

  1. কাটিং পদ্ধতি: গাছের ডাল কাটিং করে চারা উৎপাদন করা হয়।
  2. বীজ থেকে চারা: বীজ থেকে চারা উৎপাদন দীর্ঘ সময় নিলেও এটি কার্যকর।

বাণিজ্যিক সুযোগ:
চারা বিক্রি স্থানীয় কৃষি বাজার এবং নার্সারির জন্য একটি বড় আয়ের উৎস।


কামিনী গাছের কীটপতঙ্গ প্রতিরোধের কৌশল

কামিনী গাছে কীটপতঙ্গ আক্রমণ রোধে সঠিক পদ্ধতি গ্রহণ করা প্রয়োজন।

কীটপতঙ্গ প্রতিরোধ টিপস:

  • প্রাকৃতিক কীটনাশক: নিম তেল স্প্রে করা।
  • সঠিক পরিচর্যা: গাছ পরিষ্কার রাখুন এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করুন।
  • কীটপতঙ্গ পর্যবেক্ষণ: নিয়মিত গাছ পরীক্ষা করুন।

এই কৌশলগুলো অনুসরণ করলে কীটপতঙ্গের ক্ষতি কমানো সম্ভব।


কামিনী ফুলের সৌন্দর্যবর্ধনে ভূমিকা

kamini flower

বাগান ও বাড়ির শোভা বাড়াতে কামিনী ফুলের গাছ একটি আদর্শ পছন্দ।

সৌন্দর্যবর্ধনের পদ্ধতি:

  1. বাগানের কেন্দ্রে স্থাপন: এটি বাগানের মূল আকর্ষণ হতে পারে।
  2. টবে রোপণ: বারান্দা বা ছাদে টবে রোপণ করা যায়।
  3. হেজ বা বেড়া: কামিনী গাছ দিয়ে হেজ তৈরি করলে এটি আকর্ষণীয় দেখায়।

এর সুগন্ধ এবং সৌন্দর্য বাগানপ্রেমীদের মন জয় করে।


কামিনী গাছের বাণিজ্যিক গুরুত্ব

কামিনী গাছ সৌন্দর্য, সুগন্ধি এবং ঔষধি গুণাবলীর কারণে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

বাণিজ্যিক ব্যবহার:

  • চারা ও ফুল বিক্রয়: নার্সারিতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
  • সুগন্ধি উৎপাদন: পারফিউম এবং প্রাকৃতিক তেলের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।
  • ঔষধি গুণাবলী: হারবাল পণ্যে এর নির্যাস ব্যবহৃত হয়।

এটি স্থানীয় কৃষকদের আয়ের একটি বড় উৎস।


কামিনী ফুল নিয়ে জনপ্রিয় গল্প ও সাহিত্য

কামিনী ফুলের সৌন্দর্য এবং ঘ্রাণ বহু কবি ও লেখকের অনুপ্রেরণা।

সাহিত্য ও গল্পে ভূমিকা:

  • কবিতায় কামিনী ফুল ভালোবাসার প্রতীক।
  • গ্রামীণ গল্পে এটি শুভসংকেতের প্রতীক।
  • প্রাচীন উপন্যাসে কামিনী ফুলের ঘ্রাণ রোমান্টিকতার রূপক।

এর উপস্থিতি সাহিত্য জগতকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।


কামিনী ফুলের ভবিষ্যৎ গবেষণা ও উন্নয়ন সম্ভাবনা

কামিনী ফুলের বহুমুখী ব্যবহার এর ভবিষ্যৎ উন্নয়নের দিক উন্মোচন করেছে।

গবেষণার দিকসমূহ:

  • উন্নত জাতের উদ্ভাবন: দ্রুত বৃদ্ধি এবং অধিক ফুল উৎপাদনের জন্য।
  • ঔষধি উপাদান: নতুন ঔষধ তৈরিতে গবেষণা।
  • পরিবেশগত প্রভাব: বায়ু দূষণ কমানোর ক্ষেত্রে এর ভূমিকা নিয়ে গবেষণা।

এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা আমাদের কৃষি এবং অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।

কামিনী ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম কী?

কামিনী ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম হলো Murraya paniculata। এটি Rutaceae পরিবারভুক্ত একটি উদ্ভিদ।

কামিনী গাছ কী ধরনের পরিবেশে ভালো জন্মায়?

কামিনী গাছ উষ্ণ এবং আর্দ্র পরিবেশে ভালো জন্মায়। এটি রোদযুক্ত স্থান পছন্দ করে।

কামিনী গাছের মাটি কেমন হওয়া উচিত?

এটি বেলে দোআঁশ মাটি পছন্দ করে। ভালো নিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকা মাটি কামিনীর জন্য আদর্শ।

কামিনী ফুল কী কী ঔষধি গুণাবলী ধারণ করে?

কামিনী ফুল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী ধারণ করে। এটি মাথাব্যথা ও মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক।

কামিনী গাছের ফুল ফোটার মৌসুম কখন?

গ্রীষ্ম এবং বর্ষাকালে কামিনী গাছে প্রচুর ফুল ফোটে।

Conclusion

কামিনী ফুল একটি বহুমুখী উদ্ভিদ, যা সৌন্দর্য, সুবাস, এবং ঔষধি গুণাবলীর জন্য বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। এর সহজ পরিচর্যা এবং পরিবেশগত উপকারিতা এটিকে বাড়ির বাগান থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক খাতে পর্যন্ত জনপ্রিয় করে তুলেছে। কামিনী ফুলের প্রাকৃতিক সুগন্ধ শুধু মন ভালো করে না, এটি পরিবেশেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

ভবিষ্যতে কামিনী ফুলের উন্নয়ন এবং গবেষণা একে আরও বহুমুখী ব্যবহারের সুযোগ করে দেবে। তাই, কামিনী গাছের চাষ এবং যত্ন নেওয়া শুধু ব্যক্তিগত সৌন্দর্য ও শান্তি প্রদান নয়, এটি পরিবেশের সুরক্ষায়ও ভূমিকা রাখে। আপনার বাগানে কামিনী গাছ যোগ করুন এবং প্রকৃতির এই অনন্য সৌন্দর্য উপভোগ করুন।

DR. SOHEL RANA
DR. SOHEL RANA

হার্বাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ সোহেল রানা B.A.M.S (DU) সরকারী ইউনানী এবং আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মিরপুর-১৩ ঢাকা।

ডিএমইউ (আলট্রাসনোগ্রাফি) ঢাকা রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট আয়ুর্বেদিক ফিজিসিয়ান।

উৎপাদন এবং গভেষনা কর্মকর্তা (এলিয়েন ফার্মা লিমিটেড)

চর্ম ও যৌন, রুপ ও ত্বক, বাত ব্যাথা, গ্যাস্ট্রিক লাইফ স্টাইল আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ও হারবাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।

Articles: 71

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *