হাত পা ঠান্ডা হলে করনীয় : সহজ ও কার্যকর উপায়

সবার সাথে শেয়ার করুন

হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেলে তা স্বাভাবিক হতে পারে। কিন্তু, কখনো কখনো এটি অসুবিধাজনক হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে শীতকালে বা শরীরে রক্ত সঞ্চালন কম হলে। শরীরে রক্ত সঞ্চালন কম হলে হাত পা ঠান্ডা হতে পারে। এছাড়াও, মানসিক চাপ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং কিছু বিশেষ রোগও এর কারণ হতে পারে। হাত পা ঠান্ডা হলে কী করবেন? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে আপনাকে জানতে হবে কিভাবে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এছাড়াও, কিছু সহজ উপায় রয়েছে যা আপনাকে সাহায্য করতে পারে। এই ব্লগে আমরা আলোচনা করব হাত পা ঠান্ডা হলে কী কী করনীয়। তাই আসুন, জেনে নিই কিভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়।

Table of Contents

হাত পা ঠান্ডা হওয়ার কারণ

শীতকালে বা কোন ঠান্ডা পরিবেশে হাত পা ঠান্ডা হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কখনও কখনও এটি শারীরিক কোন সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। হাত পা ঠান্ডা হওয়ার কারণগুলো জানা জরুরি।

রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা

আমার এক বন্ধু ছিল, যার হাত পা প্রায়ই ঠান্ডা হয়ে যেত। পরে জানা গেল, তার রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা ছিল।

আপনার শরীরে রক্ত সঠিকভাবে সঞ্চালিত না হলে, হাত পা ঠান্ডা হতে পারে।

এটি হতে পারে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা হার্টের সমস্যার কারণে।

নিউরোলজিক্যাল সমস্যা

একবার আমার মা বলেছিলেন, তার হাত পা মাঝে মাঝে ঠান্ডা হয়ে যায়। পরে জানা গেল, তার নিউরোলজিক্যাল সমস্যা ছিল।

আপনার নার্ভ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে হাত পা ঠান্ডা হতে পারে।

এটি হতে পারে কার্পাল টানেল সিনড্রোম বা পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির কারণে।

আপনি কি কখনও খেয়াল করেছেন, আপনার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়? এই সমস্যাগুলো খতিয়ে দেখুন।

প্রাথমিক সতর্কতা

শীতের দিনে হাত পা ঠান্ডা হওয়া খুবই সাধারণ সমস্যা। এই সমস্যার সমাধান করতে কিছু প্রাথমিক সতর্কতা অনুসরণ করা জরুরী। সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আপনি সহজেই এই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।

তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ

তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে রাখা উচিত। ঠান্ডার সময় ঘর গরম রাখুন। শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করবে।

হিটার বা তাপ সরঞ্জাম ব্যবহার করুন। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।

উষ্ণ পোশাক

উষ্ণ পোশাক পরিধান করুন। হাত ও পা ঢেকে রাখুন। মোজা ও গ্লাভস ব্যবহার করুন। উষ্ণতা বজায় থাকবে।

উষ্ণ কাপড় ব্যবহার করুন। থার্মাল পোশাক ব্যবহার করুন। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

বাড়িতে সহজ উপায়

বাড়িতে হাত পা ঠান্ডা হলে সহজ কিছু উপায় মেনে চললে আরাম পাওয়া যায়। এর জন্য খুব বেশি সরঞ্জামের প্রয়োজন নেই। সহজ কিছু কৌশলেই আপনি উষ্ণতা ফিরে পেতে পারেন। নিচে কিছু কার্যকরী উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো।

গরম পানির ব্যাগ

গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করা খুবই কার্যকরী। এটি সহজেই হাত পা গরম রাখতে সাহায্য করে। একটি গরম পানির ব্যাগ নিন এবং এতে উষ্ণ পানি ভরে নিন।

তারপর ব্যাগটি হাত বা পায়ের চারপাশে রাখুন। ১০-১৫ মিনিট এভাবে রাখলে আপনার হাত পা উষ্ণ হয়ে উঠবে। সাবধান থাকুন, গরম পানির ব্যাগ যেন বেশি গরম না হয়।

উষ্ণ পানিতে হাত পা ডুবানো

উষ্ণ পানিতে হাত পা ডুবানো একটি সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি। একটি বড় পাত্রে উষ্ণ পানি নিন। তারপর হাত বা পা ধীরে ধীরে পানিতে ডুবিয়ে রাখুন।

১৫-২০ মিনিট এভাবে রাখলে হাত পায়ের ঠান্ডা ভাব দূর হবে। পানির তাপমাত্রা মাঝারি রাখুন। খুব বেশি গরম পানি ব্যবহার করবেন না।

হাত পা ঠান্ডা হলে করনীয় : সহজ ও কার্যকর উপায়

Credit: www.apollohospitals.com

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন

আপনার হাত-পা ঠান্ডা হলে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনি শরীরে তাপমাত্রা বাড়াতে পারেন এবং স্বাস্থ্যকর অবস্থায় থাকতে পারেন। আসুন দেখি কীভাবে কিছু খাবার এবং মশলা আপনার হাত-পা গরম রাখতে সাহায্য করতে পারে।

গরম খাবার

গরম খাবার খাওয়া আপনার শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে। শীতকালে গরম স্যুপ, চা, এবং ঝাল খাবার খাওয়া খুবই উপকারী। আমি নিজে শীতকালে গরম চা পান করি, যা আমাকে ভিতর থেকে গরম রাখে।

আপনি কি কোন নির্দিষ্ট গরম খাবার খেয়ে দেখেছেন যা আপনার হাত-পা গরম রাখতে সাহায্য করেছে? এমন কিছু খাবার তালিকায় রাখুন যা আপনার শরীরের তাপমাত্রা বাড়াতে পারে।

মশলাদার খাবার

মশলাদার খাবার আপনার শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে। আদা, মরিচ, কালো গোলমরিচ ইত্যাদি মশলা গরম রাখতে সহায়ক। আমি একবার মরিচ দিয়ে রান্না করা খাবার খেয়ে দেখেছি, এবং তা সত্যিই হাত-পা গরম রাখতে সাহায্য করেছে।

আপনি কি মশলাদার খাবার পছন্দ করেন? আপনার খাদ্য তালিকায় কিছু মশলাদার খাবার যোগ করুন এবং দেখুন কিভাবে তা আপনার হাত-পা গরম রাখতে সাহায্য করে।

আপনার খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করলে আপনি কি ধরনের পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছেন? আপনার খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনুন এবং দেখুন কিভাবে তা আপনার শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ম্যাসাজ ও ব্যায়াম

আপনার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেলে ম্যাসাজ ও ব্যায়াম অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। এই দুটি পদ্ধতি রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীরকে উষ্ণ রাখতে সহায়ক। চলুন দেখি কিভাবে আপনি সহজেই ম্যাসাজ ও ব্যায়াম করতে পারেন।

হালকা ম্যাসাজ

হালকা ম্যাসাজ করা খুব সহজ। আপনার হাত বা পায়ের যে অংশটি ঠান্ডা হয়ে গেছে, সেখানে আলতোভাবে ঘষুন। আঙ্গুল দিয়ে বৃত্তাকারভাবে ম্যাসাজ করুন।

আপনি যদি গরম তেল ব্যবহার করেন, তাহলে এটি আরও বেশি কার্যকর হবে। নারকেল তেল বা বাদাম তেল হতে পারে ভালো পছন্দ।

নিজে নিজে ম্যাসাজ করা সম্ভব না হলে কারও সাহায্য নিতে পারেন। এটি শুধু শরীর উষ্ণ রাখবে না, মানসিক শান্তিও দেবে।

রক্ত সঞ্চালনের ব্যায়াম

রক্ত সঞ্চালনের জন্য কিছু সহজ ব্যায়াম খুব উপকারী। যেমন, হাত বা পা সোজা করে উপরে তুলুন এবং ৫-১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। তারপর ধীরে ধীরে নামিয়ে আনুন।

আপনার আঙ্গুলগুলো মুঠো করুন এবং খোলা রাখুন। এই প্রক্রিয়াটি কয়েকবার করুন।

আপনি যদি দীর্ঘক্ষণ বসে থাকেন, তাহলে প্রতি এক ঘণ্টা পর পর উঠে দাঁড়ান এবং কিছুক্ষণ হাঁটুন। এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করবে।

মনে রাখবেন, নিয়মিত ব্যায়াম শরীরকে সুস্থ রাখে এবং ঠান্ডা হাত-পা থেকে মুক্তি দেয়।

হাত পা ঠান্ডা হলে করনীয় : সহজ ও কার্যকর উপায়

Credit: www.jagonews24.com

আয়ুর্বেদিক ও হারবাল টিপস

আয়ুর্বেদিক ও হারবাল টিপস হাত পা ঠান্ডা হলে খুব কার্যকর। প্রাচীন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি এবং হারবাল উপাদান শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। এসব টিপস সহজেই ঘরে বসে করা যায় এবং প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা হয়।

আদা ও মধু

আদা ও মধু মিশ্রণ শরীরকে উষ্ণ রাখে। আদা শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। মধু প্রাকৃতিক শক্তি প্রদান করে। এক চামচ আদা রসের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।

আয়ুর্বেদিক তেল

আয়ুর্বেদিক তেল ম্যাসাজ শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। তিল তেল বা সরিষার তেল ব্যবহার করা যায়। তেল গরম করে হাত পায়ে ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। এতে ঠান্ডা কমে যায়।

বিকল্প চিকিত্সা পদ্ধতি

হাত পা ঠান্ডা হলে অনেকেই বিকল্প চিকিত্সা পদ্ধতি বেছে নেন। এই পদ্ধতিগুলো প্রাকৃতিক এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন। কিছু জনপ্রিয় বিকল্প চিকিত্সা পদ্ধতি হলো আকুপাংচার এবং রিফ্লেক্সোলজি।

আকুপাংচার

আকুপাংচার একটি প্রাচীন চীনা চিকিত্সা পদ্ধতি। এতে সূঁচ ব্যবহার করে শরীরের নির্দিষ্ট পয়েন্টে চাপ দেওয়া হয়। এতে রক্তসঞ্চালন বাড়ে এবং ঠান্ডা হাত পা উষ্ণ হয়। আকুপাংচার প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ। এটি শরীরের শক্তি প্রবাহ উন্নত করে।

রিফ্লেক্সোলজি

রিফ্লেক্সোলজি একটি বিকল্প চিকিত্সা পদ্ধতি। এতে পায়ের নির্দিষ্ট অংশে চাপ দেওয়া হয়। এটি রক্তসঞ্চালন বাড়ায় এবং ঠান্ডা হাত পা উষ্ণ করতে সাহায্য করে। রিফ্লেক্সোলজি মানসিক চাপ কমায় এবং শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করে।

হাত পা ঠান্ডা হলে করনীয় : সহজ ও কার্যকর উপায়

Credit: www.youtube.com

মানসিক চাপ কমানো

মানসিক চাপ আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রভাব ফেলতে পারে। এর মধ্যে একটি সাধারণ লক্ষণ হলো হাত পা ঠান্ডা হওয়া। মানসিক চাপ কমানোর জন্য কিছু কার্যকর পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।

যোগব্যায়াম

যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। নিয়মিত যোগব্যায়াম করলে শরীর ও মন উভয়ই শিথিল থাকে। বিভিন্ন যোগ আসন মানসিক চাপ কমানোর পাশাপাশি রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে।

যোগব্যায়ামের মধ্যে প্রাণায়াম বা শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম বিশেষভাবে উপকারি। এটি শরীরের অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

মেডিটেশন

মেডিটেশন মানসিক চাপ কমানোর আরেকটি কার্যকর উপায়। এটি মনকে শান্ত রাখে এবং দুশ্চিন্তা কমায়। প্রতিদিন মাত্র ১০-১৫ মিনিট মেডিটেশন করলে মানসিক চাপ কমে যায়।

মেডিটেশনের সময় গভীর শ্বাস নিন এবং মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন। এটি মানসিক প্রশান্তি এনে দেয় এবং হাত পা ঠান্ডা হওয়া কমাতে সাহায্য করে।

চিকিৎসকের পরামর্শ

হাত পা ঠান্ডা হলে অনেক সময় আমরা চিন্তায় পড়ে যাই। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে চললে আপনি সহজেই এই সমস্যার সমাধান পেতে পারেন।

ডাক্তারের সাথে পরামর্শ

আপনার হাত পা ঠান্ডা হলে প্রথমেই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। ডাক্তার আপনার শারীরিক অবস্থার বিশ্লেষণ করে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন। আপনি যদি প্রায়ই এই সমস্যায় পড়েন, তাহলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি।

ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে যাওয়ার আগে আপনার সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত লিখে রাখুন। এতে ডাক্তারকে আপনার সমস্যা বুঝতে সুবিধা হবে। আপনার প্রতিদিনের অভ্যাস, খাদ্য তালিকা এবং শারীরিক কার্যকলাপ সম্পর্কে ডাক্তারকে জানান।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা

হাত পা ঠান্ডা হওয়ার সমস্যার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার শরীরে কোনো ভিটামিন বা খনিজের অভাব থাকলে তা শনাক্ত করা যাবে।

স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য আপনি আপনার নিকটস্থ হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যেতে পারেন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলে বিভিন্ন রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো জানা যাবে।

আপনার রক্তচাপ, শর্করা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সূচক নিয়মিত পরীক্ষা করান। এতে আপনি আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন থাকতে পারবেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

আপনি কি কখনও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন? আপনার অভিজ্ঞতা কী ছিল? আপনার মতামত শেয়ার করুন এবং অন্যদের সাহায্য করুন।

হাত-পা-ঠান্ডা-হলে-করনীয়
হাত-পা-ঠান্ডা-হলে-করনীয়

শীতকালে বিশেষ যত্ন

শীতকালে আপনার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালন কমে যায় এবং শরীরের শেষ প্রান্তগুলো ঠান্ডা হয়ে পড়ে। তাই শীতকালে বিশেষ যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

গরম কাপড় পরা

শীতকালে হাত পা ঠান্ডা হওয়া কমাতে গরম কাপড় পরা জরুরি। আপনি হাতমোজা এবং মোজা ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে বাইরে বের হলে গরম জ্যাকেট ও স্কার্ফ পরা উচিত।

একবার আমার হাত খুব ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। আমি তখন হাতমোজা পড়ে বাইরে বের হলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই হাত গরম হয়ে গেল।

আপনার হাত ও পায়ের জন্য সঠিক সাইজের গরম কাপড় নির্বাচন করুন। এটি রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখতে সহায়ক হবে।

গরম পানীয়

গরম পানীয় শীতকালে শরীর গরম রাখতে কার্যকর। চা, কফি বা গরম দুধ পান করতে পারেন। এটি শুধু শরীর গরম করবে না, মনকেও প্রশান্তি দেবে।

একদিন খুব ঠান্ডা লাগছিল, তখন এক কাপ গরম চা খেয়ে অনেকটাই ভালো লাগছিল।

আপনি কি কখনো গরম চা বা কফি খেয়ে দেখেছেন? এটি আপনার শরীরকে তাৎক্ষণিকভাবে গরম করবে।

শীতকালে বিশেষ যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে আপনি সহজেই হাত-পা ঠান্ডা হওয়া থেকে রেহাই পেতে পারেন। আপনি কি আরও কিছু টিপস জানেন? শেয়ার করুন কমেন্টে।

বাচ্চাদের জন্য পরামর্শ

শীতের সময় বাচ্চাদের হাত পা ঠান্ডা হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। এতে বাচ্চারা অস্বস্তি অনুভব করে এবং তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়ে। তাই, আপনার সন্তানের উষ্ণতা বজায় রাখতে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

বাচ্চাদের উষ্ণ পোশাক

আপনার বাচ্চার ঠান্ডা হাত পা এড়াতে উষ্ণ পোশাক পরানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খেয়াল রাখুন, তাদের মোজা, দস্তানা, এবং টুপি যেন সবসময় পরানো থাকে।

আমার ছোট ছেলের জন্য আমি শীতকালে সবসময় গরম উল মোজা কিনি। আপনি কি আপনার সন্তানের জন্য উল মোজা বা টুপি ব্যবহার করেন? এটি তাদের উষ্ণ রাখতে অনেক সাহায্য করে।

গরম খাবার সরবরাহ

শীতকালে বাচ্চাদের শরীর উষ্ণ রাখতে গরম খাবার সরবরাহ করা প্রয়োজন। গরম স্যুপ, দুধ বা চা তাদের শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সহায়ক।

আমি শীতকালে আমার মেয়েকে গরম চকলেট দেই, যা তার খুবই পছন্দ। আপনি কি বাচ্চাদের গরম খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করেন? এটি তাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

আপনার সন্তান যদি শীতে ঠান্ডা হাত পা নিয়ে সমস্যায় পড়ে, তাহলে এই পরামর্শগুলি মেনে চলুন। এতে তাদের সুস্থতা ও আরাম নিশ্চিত হবে।

Frequently Asked Questions

হাত পা সবসময় ঠান্ডা থাকার কারণ কী?

হাত-পা সবসময় ঠান্ডা থাকার কারণ হতে পারে রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা, হাইপোথাইরয়েডিজম, রেনাডস ডিজিজ বা মানসিক চাপ। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

পা ঠান্ডা ও দুর্বল কেন হয়?

পা ঠান্ডা ও দুর্বল হবার কারণ হতে পারে রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা, স্নায়ুজনিত সমস্যা বা ভিটামিনের অভাব। নিয়মিত ব্যায়াম ও সুষম খাদ্য গ্রহণে উপকার পেতে পারেন।

হাত ও পায়ের তালু গরম হওয়ার কারণ কী?

হাত ও পায়ের তালু গরম হওয়ার কারণ হতে পারে নার্ভ সমস্যা, হরমোনের পরিবর্তন, রক্ত সঞ্চালন সমস্যা, বা স্ট্রেস। এছাড়াও, ডায়াবেটিস বা থাইরয়েড সমস্যাও হতে পারে।

শীতে হাত পা ঠান্ডা হয় কেন?

শীতে হাত পা ঠান্ডা হয় কারণ রক্ত সঞ্চালন কমে যায়। শরীর তাপ সংরক্ষণ করতে চেষ্টা করে। ঠান্ডার ফলে রক্তনালী সংকুচিত হয়।

Conclusion

শীতকালে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। উষ্ণ পোশাক পরুন। গরম পানীয় পান করুন। হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। নিয়মিত পায়ের যত্ন নিন। আরামদায়ক মোজা পরুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। হাত পা ঠান্ডা রাখা যাবে না। স্বাস্থ্যের যত্ন নিন। ভালো থাকুন।

সবার সাথে শেয়ার করুন

DR. SOHEL RANA
DR. SOHEL RANA

হার্বাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ সোহেল রানা B.A.M.S (DU) সরকারী ইউনানী এবং আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মিরপুর-১৩ ঢাকা।

ডিএমইউ (আলট্রাসনোগ্রাফি) ঢাকা রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট আয়ুর্বেদিক ফিজিসিয়ান।

উৎপাদন এবং গভেষনা কর্মকর্তা (এলিয়েন ফার্মা লিমিটেড)

চর্ম ও যৌন, রুপ ও ত্বক, বাত ব্যাথা, গ্যাস্ট্রিক লাইফ স্টাইল আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ও হারবাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।

Articles: 243

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *